স্টাফ রিপোর্টার ::
জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের নিয়ে দিনব্যাপী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সুনামগঞ্জ শহরের জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন। সম্মেলন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক ও গল্পকার আকরাম উদ্দিন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা -বাসস-এর সুনামগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সদর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার মো. নূরুল ইসলাম।
সম্মেলনের শুরুতে কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ছাতক উপজেলার নুরপুর বায়তুল হামদ জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব ক্বারী মাওলানা মোহাম্মদ শামছুল হক।
সম্মেলন শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণে বিশেষ মোনাজাত পেশ করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাস্টার ট্রেইনার মাওলানা মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা মডেল মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মফিজুর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফিল্ড সুপারভাইজার মো. আব্দুল আলী বকুল।
সম্মেলনে জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, কৃষি ও বনায়ন ও প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান বিষয়ে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যাতে প্রত্যেক ইমাম তাদের নিজ নিজ উদ্যোগে উপার্জন বাড়াতে সক্ষম হন। তিনি বলেন, হাঁস-মুরগী পালন অর্থাৎ প্রাণী স¤পদ ও মাছের চাষ করে, চিকিৎসা সেবা প্রদান করে অথবা ব্যবসা করেও উপার্জন বৃদ্ধি করা যায়।
তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ে বাছাই করে প্রতি বছর ৩ জন নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ইমামকে বিভাগীয় পর্যায়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বাছাই করে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ইমাম নির্বাচন করা হয়। এবার জেলা পর্যায়ে ৩ জন শ্রেষ্ঠ ইমাম নির্বাচিত করে তাদের তালিকা আগামী ২৭ জানুয়ারি বিভাগীয় পর্যায়ে পাঠানো হবে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আজকের এই প্রশিক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন বিষয়ের উপর এই প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। তাই মনোযোগ সহকারে সকলে এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ইমামতির পাশাপাশি বেশি উপার্জন করার চেষ্টাও চালাতে হবে। উৎপাদনমুখি কাজে এগিয়ে যেতে হবে সকলে। ইমামদের জীবনমানের উন্নয়নে সরকার খুবই গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেন, একজন ইমাম শুধু মসজিদের নন, তিনি পাড়া-মহল্লা বা গ্রামের ধর্মীয় নেতা এবং সম্মানী ব্যক্তি। তাদের জীবনজীবিকা নিয়েও সরকারের চিন্তা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নাগরিক যারা হজ্ব করতে সৌদিতে যান। তারা অনেকে কঠিন রোগের কথা গোপন রাখেন। তারা মনে করেন আল্লাহর ঘর তোয়াফ করে এবং রাসুলুল্লাহ (সা.) রওজা মোবারক জিয়ারত করে পরে যদি মৃত্যু হয়, তখনতো জান্নাতে যাওয়া যাবে। তিনি বলেন, রোগ গোপন রেখে বাংলাদেশীরা সৌদিতে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতাল ভরে উঠেন বাংলাদেশী রোগীরা। সে দেশের সরকার তখন নানা সমস্যায় পড়েন। এই কারণে সুস্থ অবস্থায় সৌদিতে গমন করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, সৌদিতে গিয়ে অনেকে কাবা ঘরের কাছাকাছি হোটেলে থাকতে হৈ হুল্লুর শুরু করেন। এটা করা উচিত নয়। তিনি বলেন, নতুন ভোটারদের তালিকা করা শুরু হয়েছে। যারা ভোটার হননি এবং ভোটার হওয়ার বয়স হয়েছে, তারা অবশ্যই ভোটার হবেন। এ জন্য প্রতিটি মসজিদে ইমামগণকে এই বিষয়ে আহ্বান জানাতে নির্দেশ দেন তিনি।
সম্মেলনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ১১০ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমাম অংশগ্রহণ করেন।