স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার ও দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের আয়োজনে শনিবার স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে ‘সম্প্রীতি সংলাপ’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ষোলঘর রামকৃষ্ণ আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী হৃদয়ানন্দ মহারাজ লালন-এর সভাপতিত্বে ও ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার সুনামগঞ্জ জেলা ইউনিটের সাবেক কো-অর্ডিনেটর তাজকিরা হক তাজিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংলাপে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের কুদরত পাশা।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সৈয়দ মহিবুল ইসলাম, ইমাম-মোয়াজ্জিন পরিষদ সুনামগঞ্জ জেলার সভাপতি মাওলানা আবু সাঈদ, হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সুখেন্দু সেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, হাফেজ মাওলানা নূর হোসেন, শাহীনা চৌধুরী রুবি।
ধর্ম অথবা বিশ্বাসের স্বাধীনতা এবং সম্প্রীতি বিষয়ক কর্মসূচি প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন, এজেন্টস অফ চেঞ্জ : এ বাংলাদেশ ফ্রিডম অফ রিলিজিওন অর বিলিফ লিডারশিপ ইনিশিয়েটিভ প্রজেক্টের প্রোগ্রাম অ্যাডভাইজার ড. শাহনাজ করিম।
সামাজিক সম্প্রীতি সুরক্ষায় ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের ভূমিকা প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শশাঙ্ক বরণ রায়।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওয়াপদা মসজিদের ইমাম মাওলানা ফয়জুন নূর, মডেল মসজিদের মাওলানা শহীদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মাওলানা হারিছ উদ্দিন, পুলিশ ফাঁড়ি মসজিদের মুফতি মুবাশ্বির, বিলপাড় মসজিদের মাওলানা আরিফুল ইসলাম, পল্লব ভট্টাচার্য্য, সুনামগঞ্জ জেলা সুজনের সাধারণ স¤পাদক ফজলুল করিম সাঈদ, সিনিয়র সাংবাদিক আল-হেলাল, কবি আমিনুল, কর্ণ বাবু দাস, ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার সিলেট এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বর্ণা দাস, সুনামগঞ্জ ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার-এর সালেমা বেগম, আলী ইমরান, অনন্যা তালুকদার।
সংলাপে বক্তারা বলেন, সমাজের বিকাশমান ধারাকে অব্যাহত রাখতে সম্প্রীতির কোনো বিকল্প নেই। মানুষের দলবদ্ধতার মধ্যে দিয়ে সমাজের সৃষ্টি। এরই ধারাবাহিকতায় মানবসমাজের সৃষ্টি। মানুষ মূলত দলবদ্ধ হয় সম্প্রীতির মাধ্যমে। মানুষ যখন দলবদ্ধ হয়েছে তখন তারা সৃষ্টি করেছে নতুন দিগন্ত। একটি জাতির সামগ্রিক মঙ্গল এবং অগ্রগতির জন্য সম্প্রীতি অপরিহার্য।
সংলাপে মাওলানা আবু সাঈদ বলেন, ইসলাম ধর্ম সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। আমাদের নবী করিম হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর জীবনী পড়লেই বুঝতে পারবেন তিনি কতটুকু সহনশীল মানুষ ছিলেন। সমাজে শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখতে তিনি পৃথিবীর একজন মডেল। আমরা সুনামগঞ্জের মানুষ তারই ধারাবাহিকতায় সমাজে সম্প্রীতি বজায় রেখে চলছি। পূজার সময় হিন্দু ধর্মের নেতারা আমার কাছে আসেন আযান এবং নামাজের জন্য কোন সময় মাইক ও বাদ্যযন্ত্র বন্ধ রাখতে হবে। আমার দেওয়া সময় মতো তারা পূজার সময় বিরতি দেন - এটাই সম্প্রীতির উদাহরণ।
সভাপতির বক্তব্যে শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী হৃদয়ানন্দ মহারাজ লালন বলেন, সুনামগঞ্জ সম্প্রীতির শহর। আমরা একে অন্যের ভাই। তিনি বলেন, আল্লাহ যদি হযরত আদম ও হাওয়া থেকে মানুষ সৃষ্টি করে থাকেন তাহলে আমরা সবাই ভাই ভাই। আমাদের মাঝে কোনো বিভেদ নাই। আমরা যে যে, ধর্ম বিশ্বাস করি না কেন, সব ধর্মই সম্প্রীতির কথা বলেছে। আমরা সবাই মিলে সুনামগঞ্জকে দেশের একটি অসাম্প্রদায়িক এলাকা হিসেবে চিহ্নি করতে পারছি। আমাদের এই ধারা অব্যাহত থাকবে।