স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগর উপত্যকা-৪৮/২ আবাসিক এলাকায় এক বাসার গ্যাসের লাইন কেটে অন্য বাসায় সংযোগ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি সুনামগঞ্জের জালালাবাদ গ্যাস টি এন্ড ডি সিস্টেম লিমিটেড, আঞ্চলিক বিতরণ কার্যালয় কর্তৃপক্ষ লাইন কেটে অন্য বাসায় অবৈধ লাইন সংযোগ দেয়ায় অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, শহরের হাছননগর উপত্যকা-৪৮/২ আবাসিক এলাকায় মৌজা-সদর উপজেলা, জে.এল. নং-১১২, খতিয়ান এসএ-২০২, দাগ এসএ-২০৫, জায়গার পরিমাণ-০.০৬৫০ একর ভূমি ও বাসা/বাড়িতে সংযুক্ত গ্যাস লাইনের গ্রাহক সংকেত নং-০৪০১০-১১২৯ দুই চুলাবিশিষ্ট লাইন কেটে নিয়ে অন্য বাসায় সংযোগ দেয়া হয়েছে।
বাসার ক্রয়সূত্রে বর্তমান মালিক শাহ আলম জানান, তিনি ২০১৬ইং থেকে দলিলমূলে এই বাসার মালিক। ভূমি, স্থাপনা এবং গ্যাস লাইনসহ ক্রয় করে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি সুনামগঞ্জের জালালাবাদ গ্যাস অফিসের লোকজন এসে তার বাসার গ্যাস লাইন মেরামতের নামে কেটে অন্য বাসায় অবৈধভাবে গ্যাস লাইন সংযোগ দেয়। এতে তিনি রান্নার কাজে নানা সমস্যায় ভোগছেন। গত বুধবার দুপুরে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে মোস্তফা তার ভাই মোহাম্মদ আলী সেলিম শাহ আলমকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
শাহ আলম আরো জানান, এই বাসার সাবেক মালিক মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে কিনেছেন। কিন্তু মুজিবুর রহমান কিনেছিলেন মৃত ইছাক আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী সেলিমের কাছ থেকে। এখন প্রথম মালিক গ্যাস লাইন নিজের বলে দাবি করে বসেন। তখন শেষ দলিলের বর্তমান মালিক শাহ আলম গ্যাস লাইনের দাবি ছাড়াতে ১ লাখ ১১ হাজার টাকা পরিশোধের মাধ্যমে একটি চুক্তিপত্র স¤পাদন করেন মোহাম্মদ আলী সেলিমের সাথে। এর কিছুদিন পর মোহাম্মদ আলী সেলিম আরও টাকা দাবি করে বসেন।
এক পর্যায়ে টাকা না দেয়ায় সম্প্রতি গ্যাস কর্তৃপক্ষকে দিয়ে লাইন কেটে অন্যের মালিকানাধীন বাসায় সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ হয়েছে। এই ঘটনার জের ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে বিদ্বেষ দেখা দিয়েছে। শাহ আলমদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছেন মোহাম্মদ আলী সেলিম গংরা।
সাবেক মালিক মোহাম্মদ আলী সেলিম বলেন, আমি মুজিবুর রহমানের কাছে জায়গা বিক্রি করেছি স্থাপনা, গ্যাস লাইনসহ। এখন তিনি বিক্রি করেছেন শাহ আলমের কাছে। আমার কোনো আপত্তি নাই। গ্যাস লাইনের দাবি ছাড়াতে আমি ৫০ হাজার টাকা পেয়েছি। আমার আরও দাবি ছিল। টাকা না পেয়ে আমি আমার লাইন সরিয়ে নিয়ে অন্যের বাসায় সংযোগ দিয়েছি। আমি শাহ আলমের সঙ্গে গ্যাসের চুক্তিনামা করেছি ঠিক আছে। কিন্তু তা আমি অস্বীকার করি না। চুক্তিনামা দিয়ে শাহ আলম যদি মামলা করে তাহলে আদালত আমাকে যে শাস্তি দেবেন তা আমি মাথা পেতে নেবো। তারপরও শাহ আলমের সঙ্গে আপোস করবো না।
সালিশ ব্যক্তিত্ব হাজীপাড়ার বাসিন্দা মামুনুর রশিদ বলেন, গ্যাস লাইনের দাবি ছাড়াতে কয়েকবার সালিশ হয়েছে। মোহাম্মদ আলী সেলিমকে ১ লাখ ১১ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এরপরও তিনি গ্যাস লাইন সরিয়ে অন্যের বাসায় সংযোগ দিয়েছেন।
অপর সালিশ ব্যক্তিত্ব শিব্বির আহমদ বলেন, খালি বাসা পেয়ে হঠাৎ একদিন শাহ আলমের বাসার গ্যাস লাইন কেটে নিয়েছেন মোহাম্মদ আলী সেলিম। তাহলে টাকা নেওয়াটা উচিত হয়নি। এই গ্যাস লাইন ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জের জালালাবাদ গ্যাস টি এ্যান্ড ডি সিস্টেম লিমিটেড, আঞ্চলিক বিতরণ কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল হক বলেন, এক সময় একজনের বাসার গ্যাস লাইন অন্য বাসায় সংযোগ দেয়া যেতো। এখন সরকারে সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। মোহাম্মদ আলী সেলিমের গ্যাস লাইন অন্য বাসায় সংযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা ২০২০ সালের ঘটনা।