শহীদনূর আহমেদ :: জেলার সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়ন। শিমুলবাঁক গ্রামের নামে ইউনিয়নের নামকরণ হলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে। কয়েক কিলোমিটার অদূরে সুনামগঞ্জ-দিরাই আঞ্চলিক সড়ক হলেও গ্রামটির সাথে সড়কপথ নির্মিত হয়নি। এছাড়া এক যুগ আগে গ্রামের পার্শ্ববর্তী ‘নিতাই’ নদীতে একটি সেতু নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় চলাচলে চরম ভোগান্তিতে শিমুলবাঁকসহ ৭টি গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ। হেমন্তে পায়ে হেঁটে চলাচল করলেও বর্ষায় নৌকাই একমাত্র ভরসা এই গ্রামগুলোর। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসলেও উপেক্ষিত থাকে জনদাবি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ভোটের রাজনীতিতে বিভিন্ন সময় দাবির পক্ষে আওয়াজ তুললেও কার্যকর না হওয়া ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তাই কালবিলম্ব না করে দ্রুত সময়ে শিমুলবাঁক সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জানা যায়, উপজেলার শিমুলবাঁক, রঘুনাথপুর, গোবিন্দপুর, লালখালি, বাদরপুর, উগলিসহ ৭ গ্রামের বাসিন্দাদের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে ২০১২ সালে নিতাই নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর। কিন্তু শিমুলবাঁক গ্রাম থেকে তেওইক্কা গ্রামে পর্যন্ত সড়ক পথ না থাকায় কাজে আসেনি বহুলপ্রতিক্ষিত সেতুটি। হেমন্তে কাচা পথ দিয়ে সিএনজি, মোটরবাইকসহ অন্যান্য পরিবহন চলচল করলেও সেতুতে অ্যাপ্রোচ না থাকায় থেমে যায় নিতাই নদীর পাড়ে। সেখান থেকেই হেঁটে অন্যত্র যান স্থানীয়রা। তাছড়া বর্ষা মৌসুমে মূল সড়কে পৌঁছতে একমাত্র নৌকার উপর ভরসা করেন স্থানীয়রা। শিমুলবাঁক গ্রামের বাসিন্দা মোক্তাদির তালুকদার বলেন, বিগত সময়ে আমাদের গ্রাম সবচেয়ে বঞ্চিত ছিল। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে নদীর উপর সেতু নির্মাণ করলেও এক যুগেও সংযোগ সড়ক হয়নি। হেমন্তেÍ কিছু পরিবহন কাঁচা সড়ক দিয়ে আসলেও এপ্রোচের কারণে সরাসরি গ্রামে আসতে পারে না। নদীর পাড়ে আটকে যায়। এই দুর্ভোগ আমাদের কবে শেষ হবে জানি না। কয়েক কিলোমিটার সড়কের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। কেবল আশ্বাসই আমরা পাচ্ছি, বাস্তবায়ন দেখছি না। স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহবুব হোসেন বলেন, একটি সেতুর সংযোগ সড়কের জন্য এই এলাকার মানুষের দুর্ভোগের শেষ নাই। হেমন্তে কিছুটা কষ্ট কম হলেও বর্ষায় নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হয় ৫-৭ গ্রামের মানুষকে। সড়ক নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন একটি প্রকল্প টেন্ডার হওয়ার কথা শুনেছি। যদি এটা বাস্তবায়ন হয় তাহলে এই অঞ্চলের মানুষের দুঃখ লাঘব হবে। শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী তারেক আলনূর বলেন, শিমুলবাঁক থেকে তেয়ইক্কা পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ, পাকা সড়ক, ব্লক নির্মাণসহ প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের টেন্ডার হয়েছে। আশা করছি এবছরই কাজ শুরু করা যাবে। এর মাধ্যমে এই এলাকার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে।