স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিজয়া পুনর্মিলনী, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় শহরের শ্রীশ্রী জগন্নাথ জিউর নাট মন্দিরে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সহযোগিতায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, জুলাই আন্দোলনের তিন দিনের ব্যবধানে আমি সুনামগঞ্জে এসে যোগদান করি। দুর্গাপূজা উদযাপনকে সামনে রেখে মহাচিন্তায় পড়ে যাই, জেলার দুর্গম এলাকার তিনটি উপজেলা নিয়ে। বিশেষ করে শাল্লা, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলা নিয়ে। কারণ এই উপজেলাগুলো জেলা শহর থেকে অনেক দূরে এবং দুর্গম এলাকায়। পূজাম-পকে নিরাপদ রাখতে এবং কাজে উৎসাহ বাড়াতে প্রতিটি উপজেলায় পুরস্কারের ঘোষণা দেই। যাদের ম-প সবচেয়ে ভালো হবে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানাই। তিনি বলেন, ওই সময় পুলিশ বাহিনী, বিজিবি সদস্য এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইনশৃংখলা পরিস্থিতি রক্ষায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। স্বস্ব উপজেলাবাসী স্বহৃদয় হয়ে তাদেরকে সহযোগিতা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমাদের দেশ। আমরা বাংলা মায়ের সন্তান। সকলের সহযোগিতায় আমরা এ দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করবো। এই জন্য সকলের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার আ.ফ.ম আনোয়ার হোসেন খান বলেন, দেশে জুলাই আন্দোলনের পরপরই আমি সুনামগঞ্জে এসে খুবই দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম। ওই সময় জেলা প্রশাসকের সাথে পরামর্শক্রমে ভালমানের পূজা ম-পের জন্য বিশেষ পুরস্কারের ঘোষণা দেয়া হয়। এতে নিরাপত্তা কাজে সকলের মধ্যে চেতনা জাগ্রত হয়। পরবর্তীতে সক্রিয় পুলিশ বাহিনীসহ সকল মহলের সহযোগিতায় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠান নিরাপদভাবে করতে পেরেছি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ প্রমুখ।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ স¤পাদক বিমল বণিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ ধূর্জটি কুমার বসু, ষোলঘর রামকৃষ্ণ আশ্রমের অধ্যক্ষ হৃদয়ানন্দ মহারাজ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাড. বিমান কান্তি রায়।
শিক্ষাবিদ ধূর্জটি কুমার বসু বলেন, আজ এতো সুন্দর অনুষ্ঠানের আয়োজন দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। আমার মনে হচ্ছে এদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সকলে মিলেমিশে শান্তি ও নিরাপদে আছি। আমি আশাবাদী দেশের টেকসই উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারবে আমাদের তরুণ প্রজন্ম।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাড. বিমান কান্তি রায় বলেন, এবার আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপন করতে পেরেছি। আমাদেরকে রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার সচেতন মানুষজন সহযোগিতা করেছেন। এই জন্য আমরা নিরাপদভাবে দুর্গোৎসব করতে সক্ষম হয়েছি।
অনুষ্ঠানে সহযোগিতায় ছিলেন শ্রীশ্রী জগন্নাথ জিউর নাট মন্দিরের সাধারণ স¤পাদক বিজয় তালুকদার বিজু। অনুষ্ঠানে গীতা থেকে পাঠ করেন অমিত চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রূপালী সোম।