দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি ::
দোয়ারাবাজারে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের ভেল্কিবাজি লক্ষ করা যাচ্ছে। খাসিয়ামারা নদীর বামতীরে বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু করলে স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক বাঁধের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর একদিন পরই বালুর ওপর মাটির প্রলেপ দিয়ে বাঁধের কাজ শুরু করেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় কৃষকরা বলেছেন, ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের শুরুতেই নীতিমালা তোয়াক্কা না করে কাজ শুরু করেছেন পিআইসি সংশ্লিষ্টরা। এবারও বাঁধে অনিয়ম, গাফিলতি এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাঁধের কাজ স¤পন্ন না হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা খাসিয়ামারা নদী তীরের কৃষকদের।
বক্তারপুর গ্রামের কৃষক জুয়েল মিয়া বলেন, ভাঙ্গা পুরোটাই বালি দিয়ে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে পাউবোর ইঞ্জিনিয়ার এসে ভাঙা হতে বালি সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু পিআইসির সংশ্লিষ্টরা বালি না সরিয়ে বালির ওপর মাটির প্রলেপ দিয়ে এখন বাঁধের কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে বালুর বাঁধ ও বালুর ওপর মাটির প্রলেপ দিয়ে বাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধে স্থানীয় কৃষকরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ ও কৃষকদের বাধা-নিষেধ উপেক্ষা করে এখন বালুর বাঁধের ওপর মাটির প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে। যাদেরকে পিআইসি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাদের নামে ওই বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ও বেড়িবাঁধ সীমানায় তাদের কোনো জমি নেই। খাসিয়ামারা নদীর বামতীরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে স্থানীয় পাউবো’র কর্তাদের যোগসাজশে পিআইসি’র অন্তরালে থাকা প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ১৪ নং পিআইসি খাসিয়ামারা নদীর বামতীরের ৫৮ মিটার ডুবন্ত বাঁধের ভাঙা বন্ধকরণ ও পুনরাকৃতকরণ কাজ নির্মাণে ৮ লাখ ২২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুরুতে ধুলোমিশ্রিত বালু দিয়ে বাঁধ তৈরি করা হয়। পরে এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ওই বাঁধের ওপর মাটির প্রলেপ দিয়ে দায়সারা কাজ করা হচ্ছে। ফলে বৃষ্টি শুরু হলেই পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ফসলরক্ষা বাঁধ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পিআইসি’র সাধারণ স¤পাদক মোস্তফা মিয়া বলেন, আমি পিআইসির সদস্য। বালি সরিয়েই মাটি ফেলা হচ্ছে।
পাউবো’র এসও সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, বালির বাঁধ নির্মাণ করতে গেলে আমরা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি, এ বিষয়ে ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলুন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেহের নিগার তনু বলছেন, বালুর বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে জেনে আমরা সেখানে গিয়ে বাঁধের কাজ বন্ধ করে দিয়ে আসছি। এখন যদি তারা বালুর ওপর মাটির প্রলেপ দেয়, তাহলে পিআইসিই বাতিল করে দেবো।