সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহ¯পতিবার সকালে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলাম দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে জামিন নামঞ্জুর করেন। রায়ের পর তাঁর আইনজীবীরা বলেছেন, তাঁরা এখন উচ্চ আদালতে যাবেন।
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আজ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানিতে তাঁর পক্ষে হাইকোর্টের আইনজীবী অপূর্ব চরণের নেতৃত্বে একদল আইনজীবী অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে শুনানিতে অংশ নেন। তাঁরা তাঁদের পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরাও বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। শেষে আদালত আসামির জামিন নামঞ্জুর করেছেন।
এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত এলাকায় কড়া নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। বিচারপ্রার্থীদের আদালত প্রাঙ্গণে ঢোকার আগে কাগজপত্র যাচাই করা হয়। আদালতে ঢোকার ও বেরোনোর দুটি পথে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, বিজিবি ও সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়।
আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন হাইকোর্টের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য্যের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একদল আইনজীবী। শুনানিতে আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট মুফিজুল হক ভূঁইয়াসহ একদল আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আদালত কক্ষ থেকে বের হয়ে আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, আদালতকে আমরা সাবমিশন দিয়েছি। সবকিছু শোনার পর আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন। আমরা এখন উচ্চ আদালতে যাব।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ নভেম্বর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর হলে ওই দিনই চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের শুনানি হয় ৩ ডিসেম্বর। কিন্তু ওই দিন তার পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষও শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করে।
এসবের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জামিন শুনানির জন্য ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। কিন্তু ১১ ও ১২ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে রবীন্দ্র ঘোষ নামের এক আইনজীবী এসে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার আবেদন করেন। কিন্তু আবেদনটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় না করায় আদালত তা নাকচ করে পূর্বনির্ধারিত তারিখে জামিন শুনানির দিন ধার্য রাখেন।
গত ২৫ নভেম্বর বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন কোতোয়ালি থানায় হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে মহানগর ষষ্ঠ কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এটি নিয়ে বিক্ষোভ করেন ইসকন অনুসারীরা।