সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর মাঠে বাণিজ্যমেলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ প্রতিবাদ সভা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সম্মুখে বৃহত্তর ষোলঘর এলাকাবাসীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে জেলার আইনজীবীরা ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার ক্রীড়াপ্রেমী সচেতন নাগরিকগণ অংশগ্রহণ করেন এবং পরের দিন বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছেন ষোলঘরের মুসল্লিরা। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বাদ জুম্মা এই বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদীদের বক্তব্য হলো, মেলার আড়ালে অশ্লীল নৃত্যসহ উচ্চস্বরে মাইক বাজানো ও উচ্চশব্দ সৃষ্টি হয়, সড়কে যানজট লেগে থাকে, রোগীর সমস্যা হয়, নামাজ-রোজা সবকিছুর ব্যাঘাত ঘটে, বাচ্চাদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যায়, এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়।
আমরা এলাকাবাসীর সচেতনতার তারিফ করি আর তাদের সমর্থনও করি। প্রতিবাদীদের বক্তব্যে বাচ্চাদের খেলাধুলার সুযোগ নষ্টের বিষয়টি এসেছে। এজন্যে তাঁদের আবারও ধন্যবাদ। কিন্তু খেলাধুলার আগে চাই লেখাপড়ার নিশ্চয়তা। অতীব পরিতাপের বিষয় যে, বাচ্চাদের লেখাপড়ার বিষয়টি প্রতিবাদীদের বিবেচনায় নেই। অথচ একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের পাশেই অবস্থান করছে। বাণিজ্যমেলার কোলাহলের ভোগান্তি এই বিদ্যালয়ের জন্য স্থায়ী নয়, কদিন পরে মেলা থাকবে না। কিন্তু এই বিদ্যালয়ের পাশে মাছের হাট বসানো হয়েছে, সেটি সব সময় থাকবে।
বাণিজ্যমেলার কারণে বাচ্চারা কীছুদিন খেলাধুলা করতে পারবে না, এজন্য অভিভাবকরা চিন্তিত হয়েছেন, কিন্তু বিদ্যালয়ের দেয়াল লাগোয়া মাছবাজারের উচ্চ কোলাহল ও বিশ্রী গন্ধের কারণে বছরব্যাপী বাচ্চাদের লেখাপড়া বিঘিœত হবে, এই বিষয়টা দীর্ঘদিন যাবৎ অভিভাবকদের নজরে আসছে না। বাচ্চাদের এই শিক্ষাসমস্যা নিয়ে কেউ কোনও প্রতিবাদ কিংবা বিক্ষোভ করছেন না কেন বোধগম্য নয়।
অভিজ্ঞমহলের ধারণা, ষোলঘরের বাচ্চাদের অভিভাবকেরা সাময়িক হিসেবে ছোট একটি সমস্যাকে যতোটা বড় করে দেখেন এবং ভাবেন, সব সময়ের জন্যে লেগে থাকা একাট বড় সমস্যাকে ততোটাই ছোট করে দেখেন ও ভাবেন। তাই ষোলঘর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মাছবাজার বসানো হয়েছে এবং বসানোই থাকবে। কেউ প্রতিবাদ করবেন না।