সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সিলেটের চালিবন্দর এলাকায় স্বামী-স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। স্বামীর পরিবার এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক দাবি করলেও স্ত্রীর পরিবার এটা পরিকল্পিত হত্যাকা- বলে দাবি করছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে অসুস্থ অবস্থায় নগরীর চালিবন্দরস্থ বাসা থেকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে স্বামী-স্ত্রী দুজনের মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহত রুবেল আহমদ (৩০) সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের আবদুল মজিদের ছেলে এবং তার স্ত্রী রাজনা বেগম (২৬) সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার দনারাম গ্রামের আবদুল আলীর মেয়ে। তারা সিলেট নগরীর চালিবন্দরের একটি বাসায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুবেল আহমদ নিজেকে হিজড়া পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ে তিনি নগরীতে হিজড়া দলের সঙ্গে ঘুরতেন। নিজেকে হিজড়া পরিচয় দিলেও তার স্ত্রী ও দুটি সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে।
রুবেল আহমদের মা জানান, কয়েকদিন ধরে রুবেলের স্ত্রী রাজনা জ্বরে ভুগছিলেন। ঘটনার দিন সকালে উঠান ঝাড়– দিতে গিয়ে রাজনা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি হাতে-পায়ে তেল মালিশ করে দেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে তাকে নিয়ে ওসমানী হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে রাজনা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ও মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে। এসময় স্বামী রুবেল আহমদ কান্নাকাটি শুরু করেন। একপর্যায়ে রুবেলও অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
রাজনা বেগমের বাবা আবদুল আলী বলেন, রাজনা সুস্থ ছিলেন। তিন-চারদিন আগেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও কোন বিরোধ ছিল না। পারিবারিক কোনো বিরোধে স্বামী-স্ত্রী দুইজনকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল উমর রাশেদ মুনির জানান, দুজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক জানান, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। তাদের মরদেহ ওসমানী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।