মো. বায়েজীদ বিন ওয়াহিদ :: জামালগঞ্জে গেল ১৫ ডিসেম্বর নীতিমালা রক্ষায় তড়িঘড়ি করে লোক দেখানো ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজের উদ্বোধন হলেও এখনো গঠন করা হয়নি পূর্ণাঙ্গ "প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি" (পিআইসি)। গত সপ্তাহ গণশুনানি হলেও, নীতিমালা উপেক্ষার ২০ দিন পেরিয়ে গেছে, এখনো চূড়ান্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) প্রকাশ করতে পারেনি উপজেলা কাবিটা স্কিম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটি। ফলে নির্ধারিত সময়ে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন উপজেলার কৃষকগণ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজের নীতিমালা অনুযায়ী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জরিপ কাজ সম্পন্ন করে প্রাক্কলন তৈরি ও গণশুনানির মাধ্যমে "প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি" গঠন করার কথা রয়েছে। এবং চলতি বছরের ১৫ ডিসেম্বর থেকে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ শুরু করে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে এখন পর্যন্ত কোনো কাজই সম্ভব হয়নি। তবে প্রাক্কলন ও গণশুনানি ডিসেম্বরে এসে শেষ হলেও এখনো চূড়ান্ত পিআইসি গঠন ও প্রকাশ করতে পারেনি উপজেলা কাবিটা স্কিম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটি। যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দসহ হাওর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সচেতন নাগরিকবৃন্দ। জানাযায়, গত ১৫ ডিসেম্বর রবিবার দুপুরে জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের পাগনার হাওরের রামপুরের ভাঙা নামক ৩০ নং পিআইসি বাঁধের উপরে কিছু মাটি ফেলে বাঁধ নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা কাবিটা স্কিম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি মুশফিকীন নূর। এসময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম জনিসহ সংশ্লিষ্ট কমিটির কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। পাউবো সূত্রে আরও জানাযায়, গত বছর উপজেলার ছোট বড় ৬টি হাওরে মোট ৪৪টি (পিআইসি) প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজ করা হয়েছিল। এবার তা কমিয়ে ৪০টি প্রকল্প গঠনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। যা জরিপ অনুযায়ী চলতি বছর উপজেলার হালির হাওর, শনির হাওর, পাগনার হাওর, মহালিয়া, মিনি পাগনাসহ ৬টি হাওরে মোট ৭ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪০ কি.মি বাঁধের কাজ করা হবে। এতে গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি ক্লোজারও রয়েছে বলে জানা গেছে। হাওরের বাঁধ নির্মাণ বিলম্ব হচ্ছে বলে উত্তর কামলাবাজ গ্রামের কৃষক আব্দুস সাত্তার বলেন, সময়মতো কাজ শুরু না হলে সময়মতো কাজ শেষ হবে না। এতে করে প্রতি বছর আগাম বন্যার কবলে ঝুঁকিতে পড়ে যায় ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ। গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিলে আমাদেরকে ফসল রক্ষার ঝুঁকি এড়ানো যেত। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোন পিআইসি কমিটি না হওয়া দুঃখজনক। আমরা চাই অতি দ্রুত কমিটিগুলো গঠন করে ঘোষণা দিয়ে কাজ শুরু করুক। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জামালগঞ্জ সেকশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম জনি জানান, আমরা এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টি কমিটি গঠন করেছি। আরো কিছু কমিটি বাকি আছে। এগুলো ইউএনও স্যার মিটিং করে যে কোনো দিন পূর্ণাঙ্গ কমিটিগুলো ঘোষণা করবেন। এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা কাবিটা স্কিম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি মুশফিকীন নূর জানান, পিআইসি গঠনের কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। খুব শীঘ্রই কমিটি ঘোষণা করা হবে।