স্টাফ রিপোর্টার ::
জমিদারের গৈরিক জমকালো পোষাক খুলে বৈরাগ্যের সাধনায় লিপ্ত হয়েছিলেন মরমী কবি ও সাধক দেওয়ান হাসন রাজা চৌধুরী। আমৃত্যু স্রস্টা ও সৃষ্টির তালাশ করেছেন গানে। নিজেকেও খুঁজেছেন। তার আমৃত্যু জিজ্ঞাসা ছিল বাউলা কে বানাইলোরে, হাসন রাজারে...। সে সাধকের মৃত্যুদিবস আজ ৬ ডিসেম্বর। গানে সুরে নিজেকে উজাড় করে বাঙলার লোকসঙ্গীতের আকাশকে উজ্জ্বল করে গেলেও এই সাধকের ১০২তম মৃত্যুবার্ষিকী নীরবেই পালিত হবে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কোনও আয়োজন নেই।
বাংলার মরমি লোকসংগীতকের ধারাকে যে কজন মহাজন সমৃদ্ধ করেছেন, তাঁদের অন্যতম ছিলেন হাসন রাজা। তাঁর গানে প্রতিফলিত হয়েছে জীবন ও জগতের গভীর তাৎপর্য। অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী প্রেমসাধনের কথা বলেছেন গানে গানে। তার সময়ে সামাজিক নানা ইস্যুতেও তিনি তীর্যক ভাষায় কথা বলেছেন গানের মাধ্যমে।
হাসন রাজার পুরো নাম দেওয়ান হাসন রাজা চৌধুরী। ১২৬১ বঙ্গাব্দের ৭ পৌষ (১৮৫৪ সালের ২৪ জানুয়ারি) সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রী পরগণার তেঘরিয়া গ্রামে এক জমিদার পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী। ১৯২২ সালের আজকের দিনে তিনি মারা যান।
প্রকৃতিপ্রেমি হাসনরাজা বজরায় ভেসে ঘুরে বেড়াতেন। বনজঙ্গলে শিকার করতেন। কোড়াপাখি শিকার ছিল তার প্রিয় নেশা। এর মধ্যেই তিনি সম্পদের মোহ ছেড়ে মরমী ধারায় নিজেকে আত্মসমর্পণ করেন। তার গানে স্রস্টার অনুসন্ধান করেন।
হাসনরাজার গান নিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা করেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। হাসন রাজার গান বিশ্বে পরিচিত করেন নির্মলেন্দু চৌধুরী। এখন দেশ বিদেশের লোকশিল্পীরা এই মহাজনের গান গেয়ে নিজেদের জনপ্রিয়তাও অর্জন করে চলেছেন।
হাসনরাজার প্রপৌত্র দেওয়ান সামারিন রাজা বলেন, হাসন রাজার মৃত্যুদিবসে সরকারি-বেসরকারি কোনও আয়োজন নেই! মিউজিয়ামটি এলোমেলো থাকায় আমরাও কোনও আয়োজন করতে পারছিনা।
সুনামগঞ্জ জেলা কালচারাল অফিসার আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী পাভেল বলেন, হাসনরাজার মৃত্যুদিবসে কোনও আয়োজন নেই। তবে আগামী ২১ ডিসেম্বর তার জন্মদিনে আমরা অনুষ্ঠানের আয়োজন করবো।