সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
আলোচিত সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার কারাগার থেকে তিন বছর সাত মাস পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল বুধবার বিকেলে তিনি কারাগার থেকে বের হন। এ সময় বাবুল আক্তারের বর্তমান স্ত্রী ইশরাত জাহান মুক্তাসহ আত্মীয়-স্বজনরা কারাগারের গেটে উপস্থিত ছিলেন। স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে ছিলেন। বাবুল আক্তারের কারাগার থেকে বের হওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী কফিল উদ্দিন।
তিনি বলেন, বাবুল আক্তারের জামিনের পর তা স্থগিত চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন তার সাবেক শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। বুধবার উচ্চ আদালত সেই আবেদনে সাড়া না দিলে তার মুক্তিতে কোনো বাধা নেই। তাই সন্ধ্যায় তাকে কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিকেলে কারাগার থেকে একটা সাদা গাড়িতে করে বের হয়ে আসেন। তার ঢাকার বাসায় যাওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে হাইকোর্টের দেওয়া ছয় মাসের অন্তর্বর্তী জামিন স্থগিত চেয়ে শ্বশুর মোশাররফ হোসেন আবেদনে সাড়া দেননি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। গতকাল বুধবার শুনানির পর ওই আবেদনে কোনো আদেশ দেননি বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার আদালত। ফলে হাইকোর্টের দেওয়া অন্তর্বর্তী জামিন বহাল থাকছে। বাবুল আক্তারের কারা মুক্তিতে আর কোনো বাধা না থাকায় তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বের হয়ে আসেন। এর আগে তার জামিনের কাগজপত্র গত ১ তারিখ চট্টগ্রাম কারাগারে এসে পৌঁছায়। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় তিনি মুক্তি পাননি। গত ২৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ বাবুল আক্তারকে ছয় মাসের জামিন দেন।
বাবুল আক্তারকে কেন নিয়মিত জামিন দেওয়া হবে না, সে প্রশ্নে রুল জারি করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। গত ১ ডিসেম্বর এই জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন মোশাররফ হোসেন। ২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন মাহমুদা খানম। তখন তার স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১২ মে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই দিনই মাহমুদার বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে বাবুলসহ আটজনকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। সেদিনই বাবুল আক্তারকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। বাবুল ও শ্বশুরের করা দুটি মামলা তদন্ত করে পিবিআই।
শ্বশুরের মামলায় ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি পিবিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এই প্রতিবেদন গ্রহণ করে বাবুল আক্তারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার আগে বাবুল আক্তারের করা মামলায় ৯ জানুয়ারি তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ মামলায় ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পিবিআই আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে পিবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্র ওই বছর ১০ অক্টোবর গ্রহণ করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। গত বছর ১৩ মার্চ বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত। ৯ এপ্রিল শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ।