ধর্মপাশা ও মধ্যনগর প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার নয়টি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের মেয়াদ শেষ হলেও গতকাল রবিবার (১ ডিসেম্বর পর্যন্ত) একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন করা হয়নি।
নীতিমালা অনুয়ায়ী, জরিপ, গণশুনানি, প্রকল্প স্থান নির্ধারণ, প্রাক্কলন তৈরি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের কাজ গত ৩০নভেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। আর ১৫ডিসেম্বরের মধ্যে বাঁধের কাজ শুরু করে তা আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। পাউবো’র সংশ্লিষ্টদের দাবি, হাওর থেকে পানি দেরিতে নামায় জরিপ, প্রাক্কলন, প্রকল্প স্থান নির্ধারণসহ অন্যান্য কাজ যথাসময়ে শেষ না হওয়ায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন করা যাচ্ছে না। নির্ধারিত সময়ে এসব কাজ শেষ না হওয়ায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ সময়মতো শুরু ও শেষ করা সম্ভব হবে না বলে শঙ্কায় আছেন কৃষকেরা।
ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় নয়টি হাওর রয়েছে। হাওরগুলো হচ্ছে- চন্দ্র সোনার থাল, গুরমার বর্ধিতাংশ, গুরমা, ঘোড়াডোবা, রুই বিল, সোনামড়ল, কাইলানী, জয়ধনা ও ধানকুনিয়া। এই নয়টি হাওরের বোরো ফসলরক্ষা বাঁধের ধর্মপাশার অংশে গত ৩ নভেম্বর থেকে এবং মধ্যনগরের অংশে গত ১২ নভেম্বর থেকে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে থাকা পাঁচটি জরিপ দল এই নয়টি হাওরে জরিপ কাজ শুরু করে। এই নয়টি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের দৈর্ঘ্য ২৪০কিলোমিটার। এবার ২২০ কিলোমিটার জরিপ করা হয়েছে। গতকাল রবিবার জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। উপজেলায় ২০৬ কিলোমিটার জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের লক্ষে ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় গণশুনানি শুরু হবে ৪ ডিসেম্বর থেকে এবং তা শেষ হবে ৬ ডিসেম্বর। ধর্মপাশা উপজেলায় সম্ভাব্য পিআইসির সংখ্যা ৯৫টি ও মধ্যনগর উপজেলায় সম্ভাব্য পিআইসির সংখ্যা ৩৫টি।
উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের জারারকোনা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মনফর আলী (৪০) বলেন, ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ যথাসময়ে শুরু করতে হবে। কোনো অজুহাত আমরা শুনতে চাইনা। আমরা ২০১৭ সালের ফসলডুবির ঘটনা আর দেখতে চাই না।
ধর্মপাশা উপজেলায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের তদারকির দায়িত্বে থাকা সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম ও মধ্যনগর উপজেলায় ফসলরক্ষা বাঁধের তদারকির দায়িত্বে থাকা সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী নূর আলম বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার হাওর থেকে পানি নামছে ধীরে ধীরে। এ জন্য পিআইসি গঠন, গণশুনানিসহ যাবতীয় কাজ কিছুটা পিছিয়েছে।
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন ও মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) উজ্জ্বল রায় বলেন, হাওরের বোরো ফসলরক্ষায় বাঁধের কাজের জন্য পিআইসি গঠনসহ যাবতীয় কাজ ১৫ ডিসেম্বরের আগেই শেষ করা হবে। আর নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শুরু করে তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ করা হবে। এ জন্য আমাদের সবরকম প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।