শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি ::
শান্তিগঞ্জে ‘হাওরের ১০০ বছর এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালা করেছে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে গ্রামীণ জনকল্যাণ সংসদ। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর ২টায় শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে এ কর্মশালা করা হয়েছে।
কর্মশালার উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা বলেন, জলমহাল লিজ দেওয়ার নামে সরকারিভাবে হাওরের মৎস্য ভান্ডার লুট করা হচ্ছে। বিলের মালিকরা বর্ষায় হাওরের মালিক হয়ে যান। হেমন্তে বিল সেচে মাছ ধরেন আবার মাটির নিচ থেকে মাছ ধরতে বিলে ইউরিয়া সার ব্যবহার করেন।
তারা বলেন, এ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে হবে। হাওরের সকল বিল ও জলাভূমি খনন করতে হবে। যাদের কাছে বিল ইজারা দেওয়া হবে তাদেরকে শর্ত দিয়ে দিতে হবে বছরে কতগুলো হিজল-করচ গাছ লাগাতে হবে। পাশাপাশি শর্ত ভঙ্গ করলে তাদের ইজারা বাতিল করতে হবে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহার সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফিমেইল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও গ্রামীণ জনকল্যাণ সংসদের নির্বাহী পরিচালক জামিল চৌধুরী, জয়কলস ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজন, পাথারিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রশিদ আমিন।
অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, দি হাঙ্গার প্রজেক্টের জেলা সমন্বয়ক একে কুদরত পাশা, শান্তিগঞ্জ পিএফজির এম্বাসেডর জিয়াউর রহমান জিয়া, হারুন মিয়া, পিএফজি সদস্য সিরাজ মিয়া, সৈয়দ আলম, জিয়াসমিন, ইয়ুথ এম্বাসেডর স্বর্ণা দেব, উপজেলা সুজনের সাধারণ স¤পাদক সাজ্জাদুর রহমান প্রমুখ।
কর্মশালায় উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষজন উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তেব্যে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, হাওর শুধু ধান চাষের জন্য জন্য। হাওর এবং জলাভূমি নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে। হাওরে ধান চাষের চেয়ে মাছ চাষ অনেক লাভবান হবে। হাওরের বিল এবং জলাশয়গুলোর পাড় দিয়ে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। হিজল, করচ গাছ পানির নিচে নয় মাস বাঁচতে পারে। গাছ মাটি ধারণ করে রাখবে, মাছের খাবার হবে আবার পাখির বাসা হবে।
তিনি টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর পর্যটনের দিক দিয়ে পর্যটকদের প্রথম পছন্দে রয়েছে। তাই টাঙ্গুয়ার হাওরকে কেন্দ্র করে হাওর এলাকায় কমিউনিটি পর্যটন গড়ে তোলা সম্ভব। টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের মানুষকে শুধু মাছ ধরার কাজ না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা আর্থিকভাবে সচ্ছল তারা আধুনিক দু’তলা বাড়ি তৈরি করতে পারেন। নিচতলায় নিজে থাকবেন আর দ্বিতীয় তলায় পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা করতে পারেন। তাতে পর্যটন শিল্প সমৃদ্ধ হবে, এলাকার মানুষ আর্থিকভাবে সচ্ছল হবেন। মহাপরিচালক উপস্থিত সবাইকে বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত হওয়ার জন্য আহ্বান জানান এবং খালে বিলে মাছ অবমুক্ত করার জন্য বলেন।