শহীদনূর আহমেদ ::
সুনামগঞ্জ জেলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী কুস্তিখেলা। গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসন ও ক্রীড়া সংস্থার যৌথ আয়োজনে এই আন্তঃউপজেলা কুস্তিখেলার আয়োজন করা হয়। এতে জেলার পাঁচটি উপজেলার খেলোয়াড়রা অংশগ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী ছিল আন্তঃউপজেলার এই কুস্তিখেলার আয়োজন।
কুস্তিখেলা দেখতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হন হাজারো মানুষ। সকালটা তাই শুরু হয় উৎসবের আমেজের মধ্য দিয়ে। দাওয়াতি খেলোয়াড়দের সাথে লড়তে স্ব স্ব শিবিরে ছিল উত্তেজনা। দর্শকদের করতালি জানান দিচ্ছিল বাঙালির চিরচেনা এই খেলার কদর কমেনি একটুও। গ্রামীণ এই খেলার মাধ্যমে মানুষে মানুষে সম্প্রীতি ও ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারা সমুন্নত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মাঠে আসা দর্শক ও খেলোয়াড়রা।
গ্রামবাংলার শত বছরের ঐতিহ্য কুস্তিখেলাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান দর্শনার্থীরা।
সকালে আন্তঃকুস্তিখেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। গ্রামীণ কুস্তিখেলাকে এগিয়ে নিতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার কথা জানান তিনি। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
আন্তঃউপজেলা কুস্তিখেলায় একে একে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, শান্তিগঞ্জ উপজেলার শতাধিক খেলোয়াড় তাদের বীরত্বের জানান দেন। দুপুরে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় সদর উপজেলার সাথে মুখোমুখি হয় তাহিরপুর উপজেলা। খেলার প্রথমভাগে দুই দলের খেলোয়াড়দের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও শেষভাগে সদর উপজেলার খেলোয়াড়রা অসাধারণ নৈপুণ্যের মাধ্যমে ৩-১ এর ব্যবধানে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান দলকে। খেলা শেষে বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অতীশ দর্শী চাকমার সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেডক্রিসেন্টের বাংলাদেশের সদস্য নূরুল ইসলাম সাজু, জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা আল আমীনসহ ক্রীড়া সংস্থার অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এদিকে, ঐতিহ্যবাহী কুস্তিখেলাকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি নানা উদ্যোগের কথা জানান আয়োজকরা।
আন্তঃউপজেলা কুস্তিখেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, কুস্তিখেলা গ্রামবাংলার একটি জনপ্রিয় খেলা। আমরা চাই এই কুস্তিখেলাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে। তাই প্রতি বছর আমাদের এই আয়োজন। ভবিষ্যতে এর ধারা অব্যাহত রাখতে ক্রীড়া সংস্থা বদ্ধপরিকর।
সরকারি-বেসরকারি প্রচেষ্টায় কুস্তিখেলা তার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে পাবে এমনটাই প্রত্যাশা খেলাপ্রেমিদের।