সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সাম্প্রতিক অস্থিতিশীল ঘটনাবলী বিভেদ-বিভাজনকে উসকে দেওয়ার চক্রান্ত হিসেবে দেখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, তিনটা মাসও হয়নি এখনও, এর মধ্যেই আমাদের আসল চেহারা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। আমার নিজের ঘরেই যদি বিভাজন থেকে যায়, বিভেদ থেকে যায় এটা কখনোই ঠিক করতে পারব না।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন-ড্যাবের উদ্যোগে নব্বইয়ের স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ডা. শামসুল আলমের স্মরণে ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও রাষ্ট্র গঠনে চিকিৎসক সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি একথা বলেন।
সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই কয়েকটা দিনে আমরা খুব চিন্তিত, ভয়াবহভাবে উদ্বিগ্ন। ধর্মকে কেন্দ্র করে কী উন্মাদনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। মুক্ত স্বাধীন মিডিয়ার জন্য, প্রেসের জন্য, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য আমরা এতদিন লড়াই করলাম অথচ এখন তাদের অফিস পুড়িয়ে দিচ্ছে। এই বাংলাদেশ তো আমরা দেখতে চাই না। প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ অন্যান্য সমস্ত পত্রিকাগুলোতে যে আক্রমণ শুরু হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানাই।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির পোস্টের কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কী উন্মাদনা, যখন দেখি জ্বালিয়ে দাও, পুঁড়িয়ে দাও- আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। চিন্তা করতে পারেন কোন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশকে? আমরা কি বুঝি আমাদের ভয়টা কোথায়? আমরা কি বুঝি আমাদের আতঙ্কটা কোথায়? আমরা কি বুঝি আততায়ী কোথায় ছুরি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের পেছনে? বুঝলে আজকের এই সমস্ত দায়িত্বহীন, ইরেন্সপোনসেবল কথাবার্তা আমাদের মুখ দিয়ে বের হতো না।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের। কিছুসংখ্যক মানুষ তারা নিজেদের অত্যন্ত জনপ্রিয় মনে করেন, সবচেয়ে দেশপ্রেমিক মনে করেন আর গোটা জাতিকে আজকে তারা বিভাজনের দিকে ঠেলে দিয়ে, উসকে দিয়ে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।
দেশ রক্ষার ‘বিভাজন’ ছেড়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা জীবনের শেষ অংশে চলে আসছি। আমরা একেবারে জীবন সায়াহ্নে। সায়াহ্নে এসে আপনাদের বলতে চাই, যদি আপনারা দেশকে রক্ষা করতে চান, আপনারা স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে চান, আপনাদের অধিকারকে রক্ষা করতে চান তাহলে আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন। বিভাজনের কাছে আপনারা কখনো মাথা নোয়াবেন না, অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়াবেন না, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবেন না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকার কিন্তু কারো দয়ার দান না। কেউ দয়া করে করেনি এটাকে। এটাকে এদেশের ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দিয়ে এই সরকার তৈরি করা হয়েছে। সুতরাং এই সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে সেটাকে স্বীকার করে নিয়ে পুরোপুরিভাবে এদেশের জনগণের যে মূল লক্ষ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সেই লক্ষ্যে যাওয়াটাই তাদের জন্য সর্বোত্তম বলে আমরা মনে করি।