স্টাফ রিপোর্টার: জামালগঞ্জ :: জামালগঞ্জে একদিনের ব্যবধানে আবারও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাত ৯টায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কামলাবাজ গ্রামের মো. হানিফ মিয়া এবং তার ভগ্নিপতি মো. রাশেদ মিয়ার ঘরে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ইউপি সদস্য মো. মমিন মিয়া বলেন, বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা ছুটে আসি। সবাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও পারিনি। পরিবার দুটির আসবাবপত্র, টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকারসহ কিছুই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও ২টা গরু, ২টা ছাগল, বাড়ির দলিল ও ১ হাজার টাকা নোটের প্রায় ৫ লক্ষ টাকা পুড়ে গেছে। তবে আংশিক কিছু পোড়া টাকা উদ্ধার করা হলেও এগুলো চালানো সম্ভব হবেনা। ক্ষতিগ্রস্ত হানিফ মিয়া বলেন, কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে জানিনা। আমার ঘরের বিদ্যুতের লাইন ৬ মাস পূর্বে কেটে দিয়েছে। আমি সৌর বিদ্যুৎ দিয়ে চলি। আমি আমার পরিবারসহ আমার ছেলের সাথে কুমিল্লা থাকি। আমার ভগ্নিপতি রাশেদ মিয়ার কোনো ঘর না থাকায় দুই বছর যাবৎ আমার ঘরে থাকেন। কয়েকদিন আগে কুমিল্লা থেকে এসেছি। আমার ঘরটিতে থাকা ভগ্নিপতির সারা জীবনের রোজগার শেষ হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত রাশেদ মিয়ার স্ত্রী কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি আমার ছোট মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলাম। আমার স্বামী আরেক বাচ্চাকে নিয়ে দোকানে গিয়েছিলেন। ঘরে কেউ না থাকায় কিভাবে আগুন লেগেছে জানিনা। হঠাৎ জানতে পারি আমার ঘরে আগুন লেগেছে। তাড়াতাড়ি হাসপাতাল থেকে এসে দেখি আমার সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার মেয়ের বিয়ে এবং বাড়ি কেনার জন্য ৫ লাখ টাকা ও ৩ ভরি স্বর্ণ গরু-বাছুরসহ সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। সারা জীবন কষ্ট করে যা রোজগার করেছিলাম তা এক মুহূর্তেই শেষ হয়ে গেলো। নিজের কোনো বাড়ি না থাকায় ভাসুরের ঘরে থাকতাম। এখন মেয়ের বিয়েও হলোনা, বাড়িও কেনা হলো না। জামালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কমান্ডার বিজয় সিং জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিটের চেষ্টায় এই আগুন নিভাতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আসার পূর্বেই ২টি বসতঘরের ভিতরে থাকা সমস্ত মালমাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে কিছু জানাযায়নি। এ বিষয়ে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকীন নূর জানান, দক্ষিণ কামলাবাজ গ্রামে হানিফ মিয়ার বাড়িতে আগুনে পুড়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।