স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের মাটিখেকো চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের কামারভিটা গ্রামে আন্তর্জাতিক সীমানার নো ম্যানস ল্যান্ডের মতো স্পর্শকাতর এলাকার টিলা কেটে মাটি বিক্রি করছে তারা। এ ব্যাপারে সোমবার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেছেন কামারভিটা গ্রামের বাসিন্দা মো. বাচ্চু মিয়া শিকদার।
সরেজমিনে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় বাচ্চুনগর পিকনিক স্পটের উত্তর পাশে টিলা কেটে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। এই মাটি ট্রলি দিয়ে নিয়ে গ্রামের আওয়াল মিয়ার নতুন বাড়ির ভিট ভরাট করা হচ্ছে। টিলার বেশ জায়গাজুড়ে মাটি খনন করা হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, খামারভিটা গ্রামের বাসিন্দা মৃত দিল মামুদের ছেলে ইউসুফ আলী ও ইদ্রিস আলী, মৃত ফজলু মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন, মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে সবুজ মিয়া, ইউসুফ আলীর ছেলে হাফিজুল ইসলাম ও কাওসার মিয়া গং টিলা কেটে এই মাটি উত্তোলন করে বেচাকেনা করছেন।
কামারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা গোলাপ মিয়া শিকদার বলেন, আন্তর্জাতিক সীমান্তে নোম্যানস ল্যান্ডে টিলা কেটে মাটি উত্তোলন করা উচিত নয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
অভিযুক্ত ব্যক্তি আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদের খোঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ইউপি সদস্য আলমাছ মিয়া জানান, ফসলি জমি তৈরি করতে টিলার নিচে থেকে মাটি কাটা হচ্ছে।
কামারভিটা গ্রামের বাসিন্দা মো. বাচ্চু মিয়া শিকদার বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে নোম্যানস ল্যান্ডে টিলা কেটে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এই মাটি অবৈধ ট্রলি-পিকআপ দিয়ে আমার পিকনিক স্পটের উপর দিয়ে নেওয়ায় রোপিত বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান গাছের চারা নষ্ট করা হয়েছে। পিকনিক স্পটে আসা দর্শনার্থীরা নানা দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন এমন আশঙ্কা করছি। যানবাহন চলাচলে এলাকার পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। আমার রেকর্ডীয় পিকনিক স্পটের ভেতর দিয়ে নিজেই রাস্তা নির্মাণ করেছি। ট্রলি-পিকআপ চালিয়ে সেটাকে নষ্ট করেছে মাটিখেকোরা। এতে আমি বাধা দিয়েছি। এখন আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে হয়রানি করতে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। সোমবার এ বিষয়ে আমি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ দিয়েছি।
জাহাঙ্গীরনগর ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ বলেন, টিলা কেটে মাটি বিক্রি বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে যারা প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসমাইল রহমান বলেন, ডিসি স্যারের অনুমতি ছাড়া আমি বক্তব্য দিতে পারি না। যদি থাকে টিলায় মাটি কাটার ছবি দেন। খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অতীশ দর্শী চাকমা বলেন, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের বাচ্চুনগর পিকনিক স্পটের উত্তর পাশে টিলা কেটে মাটি উত্তোলনের বিষয়টি আমি এসিল্যান্ডকে বলে দিচ্ছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।