স্টাফ রিপোর্টার ::
পরিচ্ছন্ন সুনামগঞ্জ শহর বিনির্মাণে নাগরিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুনামগঞ্জ পৌরসভার আয়োজনে সোমবার বেলা ১১টায় পৌর অডিটোরিয়ামে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পৌর প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পালের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কালী কৃষ্ণ পাল। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর পরিমল কান্তি দে, সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ মনোয়ার আলী, সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি নূরুর রব চৌধুরী, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অ্যাড. শামস উদ্দীন, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শুকদেব সাহা, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা জামায়াতের সাধারণ স¤পাদক মোমতাজুল ইসলাম আবেদ, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রেজাউল আলম, জেলা প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার দাসের উপস্থাপনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম, সাবেক পৌর প্যানেল মেয়র মনির উদ্দিন, সাবেক মহিলা কাউন্সিলর সৈয়দা জাহারা বেগম, সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি একে আবু নাসার, পৌরসভার সাবেক সচিব মামুনুর রশিদ, শিক্ষক ওসমান গণি, সাংবাদিক হিমাদ্রী শেখর ভদ্র, মাসুম হেলাল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক ইমন দ্দোজা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, পুরো শহরজুড়ে ময়লা-আবর্জনা রয়েছে। মানুষ নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা না ফেলে যেখানে-সেখানে আবর্জনা ফেলে দেয়। এতে দুর্গন্ধ ছড়ায়। মশা-মাছি বংশবিস্তার করে। বিশেষ করে পৌরমার্কেটের বিভিন্ন স্থানে, সবজি বাজারের নদীর তীরে, চাঁদনীঘাটের খেয়াঘাট ও নদীর তীরে বাসা-বাড়ির ও দোকানপাটের ময়লা ফেলা হয়। লঞ্চঘাটে ও খেয়াঘাটে হোটেল রেস্তোরার ময়লাস্তূপ করে নদী তীরে ফেলায় চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে দুর্গন্ধ। এভাবে শহরের বিভিন্ন স্থানে নদীর তীরে মানুষ ময়লা ফেলতে নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
তারা বলেন, শহরের ড্রেনে ও খালে ময়লা ফেলা কিছু মানুষের অভ্যাস। রাতের বেলায় দোকানপাট পরিষ্কার না করে সকালে অনেকে পরিষ্কার করে রাস্তায় ফেলে দেন ময়লা। নোংরা পানিও রাস্তায় ফেলেন অনেকে। এতে পথচারীরা ভোগান্তির শিকার হন। এসব প্রতিকার করতে হবে। এটার পরিবর্তন আনতে হবে সকলে।
তারা আরও বলেন, জেলা প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান থাকলে এসব ময়লা যেখানে সেখানে ফেলতে মানুষ চিন্তা করতো। তারা প্রশাসনের উদ্যোগে এসব সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে পৌর প্রশাসক সমর কুমার পাল বলেন, পৌরসভায় পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংকট আছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না কর্মী। এই কর্মে কেউ চাকুরি করতে চায় না। তিনি বলেন, পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন পরিষ্কার রাখতে হবে। কেউ ময়লা ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে। ডাস্টবিনে অবশ্যই ময়লা ফেলতে হবে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ৬০টি ডাস্টবিন স্থাপন রয়েছে। আরও ১শত ডাস্টবিন স্থাপন করা হবে। যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছে সুনামগঞ্জ শহর। পৌর প্রশাসক বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের পাশাপাশি মশার উপদ্রব নিধনে অভিযান শুরু হয়েছে। এতে পৌর নাগরিকদের সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন।
তিনি বলেন, শহরের যানজট নিরসনে অবৈধ অটো ও ব্যাটারিচালিত রিকসা চলাচল বন্ধ করা হবে। যাদেরকে পৌরসভা অনুমোদন দিয়েছে, এগুলো বাদে সব বন্ধ করে দেওয়া হবে। পৌর প্রশাসক বলেন, সকলের সহযোগিতা পেলে সুনামগঞ্জ পৌর শহরকে গ্রিন সিটি হিসাবে প্রতিষ্ঠা করবো।
তিনি আরও বলেন, কামারখাল উচ্ছেদের বড় ধরনের অভিযান করলে মন্ত্রণালয়ের বড় বরাদ্দ এবং জনবলের প্রয়োজন রয়েছে। সুরমা নদী থেকে ঝাওয়ার হাওর পর্যন্ত পানি নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ থাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এসব সমস্যা সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে সমাধান করা জরুরি প্রয়োজন।