স্টাফ রিপোর্টার ও দিরাই প্রতিনিধি :: হাওর উপজেলা দিরাইয়ের পল্লীগ্রামের মেয়ে মৌ রানী দাসের জাতীয় দলে ফুটবল খেলার স্বপ্নপূরণ হলোনা। অজানা অভিমানে বৃহস্পতিবার সকালে গলায় ফাস দিয়ে আত্মহত্যা করার পর ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার দুপুরে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। হাওর এলাকাকে কে নারী ফুটবলে তুলে ধরার স্বপ্ন ছিল তার। ফুটবলের মৌ মৌ গন্ধে দেশবাসীকে মাতানোর স্বপ্ন অপূর্ণ রেখে চলে যাওয়া মৌয়ের জন্য কেদে বুক ভাসাচ্ছেন তার স্বজন ও সহপাঠীরা। তার পরিবারের লোকজন মেয়ে হারানোর বেদনায় ডুকরে কাদছেন। শুক্রবার দুপুরে মৌয়ের গ্রাম ভাঙ্গাডহরে গিয়ে দেখা যায়, দুপুরে স্বজনরা তার মরদেহ দাহ করছেন। জড়ো হয়েছেন আশপাশের মানুষ। পরে বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় মা-বাবা দুই ভাই, বাকপ্রতিবন্ধী বড়ো বোন টিনসেডের বসতবাড়ির সামনে কাদছেন। তাদের সামনের চেয়ারে মৌয়ের বিভিন্ন সময়ের ছবি রাখা। অঝোরে কাদছেন মা। বাকপ্রতিবন্ধী বোনও ফুফিয়ে কাদছেন। প্রতিবেশিরা সান্ত¦না দিতেএসে তাদের চোখেল জল দেখা গেছে। কি অভিমানে সম্ভাবনাময় এই ফুটবলার নিজেকে শেষ করলেন তা ভেবে পাচ্ছেন না তারা। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বসতবাড়ির কাচারিঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে মৌ। তার মৃত্যুতে সবাই মুষড়ে পড়েছেন। মৌ দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের ভাঙ্গাডহর গ্রামের সুষেন দাসের কনিষ্ঠ মেয়ে। প্রান্তিক কৃষক বাবার কনিষ্ঠ সন্তান ছিল মৌ। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট। শুক্রবার গ্রামের শ্মশানে তার শেষ কৃত্য কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিলেন শত শত মানুষ। এলাকাবাসী জানান, প্রত্যন্ত এলাকার মেয়ে মৌ প্রাথমিক স্কুল থেকেই ফুটবল খেলায় পারদর্শী ছিল। নিজ চেষ্টায় মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পরও ফুটবল খেলা চালিয়ে যায়। দিরাই উপজেলার স্বপ্নচূড়া স্পোর্টিং ক্লাব দিয়ে তার ফুটবল যাত্রা শুরু হয়। উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলেছে। সর্বশেষ ঢাকার ফুটবল লীগেও নিয়মিত খেলেছে। অনুর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল দলের বিভাগীয় দলে জাতীয়ভাবে খেলেছে সে। দিরাই থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানালেন, মৌ কিছুদিন আগেও ফুটবল খেলেছে। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। পরে পারিবারিকভাবে শুক্রবার তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।