স্টাফ রিপোর্টার ::
ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রতি স্বাস্থ্যকর্মীর ৩/৪ মাস করে বেতন আটকে রেখেছেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শরীফুল আবেদীন কমল। ব্যক্তিগত ক্ষমতা বলে তিনি ৩ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে একাধিকবার বিনা কারণে শোকজও করেছেন। ফলে বেতন না পেয়ে নতুন ও পুরাতন মিলে ৪২ জন স্বাস্থ্যকর্মী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। রবিবার বিকেলে সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী।
এ সময় ভুক্তভোগীরা জানান, তারা সদর উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে বিভিন্ন পদে কর্মরত রয়েছেন। তারা স্বাস্থ্য সহকারী, স্বাস্থ্যকর্মী ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে এবং স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে স্বাস্থ্যকর্মীরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন এবং বেতনও পেয়ে আসছিলেন তারা। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে তথ্য উদঘাটন করেন এবং সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শরীফুল আবেদীন কমলের বিরুদ্ধে কয়েকটি পত্রিকায় বিপুল পরিমাণ অর্থ কেলেঙ্কারির সংবাদ ছাপা হয়। তখন তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের সন্দেহ করেন এবং পরবর্তীতে তাদের বেতন দেয়া বন্ধ রাখেন। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকর্মী শহীদুল কবীর জানান, আমরা দায়িত্ব পালন করে আসছি সঠিকভাবে। কিন্তু সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শরীফুল আবেদীন কমল স্যার কেন যেন আমাকে শোকজ করেছেন তা আমি বোধগম্য নই। আমি প্রায় তিন মাসের বেতন পাচ্ছি না। এতে ঘর-সংসারের খরচ নিয়ে বিপাকে পড়েছি।
জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকর্মী ফরিদুল ইসলাম বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর ডা. মোহাম্মদ শরীফুল আবেদীন কমল স্যারের বিরুদ্ধে সংবাদ ছাপা হয়েছে কয়েকটি পত্রিকায়। এ সময় স্যারের সাথে ভাল স¤পর্ক থাকার পরও তিনি সন্দেহ করেছেন আমাদেরকে। পরে আমাকে বিনা কারণে শোকজ করেছেন তিনি। এতে আমার প্রায় ৪ মাস ধরে বেতন দেয়া বন্ধ করে রেখেছেন। আমি খুবই কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করছি।
মোহনপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকর্মী রাখু চৌধুরী বলেন, আমাদের বেতন বন্ধ থাকায় পরিবারের খরচ যোগান নিয়ে সংকটে পড়েছি। আমাদের বেতন দেওয়ার দাবি জানাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শরীফুল আবেদীন কমলের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন বন্ধ থাকার বিষয়টি আমি জানি। এই বিষয়টি চলে গেছে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। আমি আশা করছি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হবে।