স্টাফ রিপোর্টার ::
ইজারাবিহীন ধোপাজান-চলতি নদীতে পরিবেশ বিধ্বংসী ড্রেজার মেশিন বন্ধ করে সনাতন পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনের দাবি জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা ও বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার ধোপাজান নদীর দুই তীরের বারকি শ্রমিকরা। রবিবার দুপুরে স্থানীয় জিনারপুর বাজারে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও বালু উত্তোলনকারী শ্রমিক সমবায় সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই দাবি জানান বারকি শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
ধোপাজান-চলতি নদীতে ড্রেজারে বালু উত্তোলন বন্ধ ও হাতের সাহায্যে বালু উত্তোলন শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, ধোপাজান বালু-পাথর মিশ্রিত মহাল একটি প্রাকৃতিক সম্পদ। প্রাচীনকাল থেকে বারকি শ্রমিকরা সনাতন পদ্ধতিতে বালু তুলে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। কিন্ত একশ্রেণির মুনাফালোভী সিন্ডিকেট ড্রেজারে বালু উত্তোলন করে নদীর বিনাশ ঘটাচ্ছে। রাতারাতি তারা কোটিপতি বনে যাচ্ছে। বারকি শ্রমিকরা মহাল ছেড়ে কর্মসংস্থানের খুঁজে রাজধানীমুখী হচ্ছেন। এখানে বারকি শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। নদীতে ড্রেজার মেশিনের তা-বে নদীর গতিপথ পাল্টে গেছে। নদীর গভীরতা বাড়ছে। নদীর দুই তীরের অসংখ্য বসতভিটা, ফসলি জমি, বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়েগেছে। স্কুল, মাদ্রাসা, বাজার, মসজিদ, কবরস্থান নদী ভাঙ্গন ঝুঁকিতে। পরিবেশ সংকটাপন্ন হয়ে পড়ছে। ইজারাপ্রথা বাতিল ও ড্রেজার বন্ধ করে বালতি, বেলচা দিয়ে বালু উত্তোলন করার সুযোগ সৃষ্টি করা হলে একদিকে যেমন হাজার হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে অন্যদিকে ড্রেজার সিন্ডিকেটের তা-ব থেকে রক্ষা পাবে নদীর পরিবেশ, প্রতিবেশ।
বক্তারা আরও বলেন, নদীতে বড় নৌকা ঢুকে দিব্যি ড্রেজারে বালু নিয়ে যায় আর বারকি নৌকা পুলিশে ধরা খায়। নদীতে এখন আগের মত বালু নেই। যেখানেই ড্রেজার সেখানেই শ্রমিকরা এখন থেকে পাকড়াও করবে। নদীতে শ্রমিকের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে আন্দোলন চালিয়ে হুঁশিয়ারি প্রদান করেন বারকি শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
শ্রমিক নেতা গনি মিয়ার সভাপতিত্বে ও ইউনুস মিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি হাফিজুর রহমান, মমিন মিয়া, ইউপি সদস্য ফারুক মিয়া, সাবেক মেম্বার জাকির মিয়া, শ্রমিক নেতা আক্তার হোসেন, জমির আলী, সাইদুল মোল্লা, লিটন মিয়া, শাহ আলম, আমজাদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর একাধিক সক্রিয় সিন্ডিকেট ড্রেজারের সাহায্যে ধোপাজান-চলতি নদীর বালু লুট করে নিয়ে যায়। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হস্তক্ষেপে কিছুদিন ধরে নদীতে বন্ধ রয়েছে বালু উত্তোলন।