পুলিশ নিয়োগে প্রার্থীর মানসিক সুস্থতার উপর জোর দিতে হবে
প্রতিবেদনের শিরোনামটি ‘পুলিশ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ’। এমন হতেই পারে। আদালত যে-কোনও কারণে এমন করতেই পারেন। এবং আদালতের নির্দেশ জারির কারণ খোঁজতে গেলে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে কোনও না কোনও গতানুগতিকতা পরিদৃষ্ট হয়। তার ব্যতিক্রম যে হয় না এমন নয়। এবং ব্যতিক্রম হলেই অবাক না হয়ে পারা যায় না। আমরা অবাক হই যখন একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আশুলিয়ায় ৪৬ লাশ পোড়ানোর ঘটনায় গণহত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায়’ কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। অবাক হওয়াটা কিন্তু আদালতের নির্দেশের জন্য নয়, নির্দেশের কারণের জন্য। কারণটা যখন হয় ৪৬ জন মানুষের পুড়িয়ে দেওয়া, তখন স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে এ কেমন পুলিশ? এই চরিত্রগত ত্রুটি কিংবা মন্দ মন-মানসিকতা নিয়ে কীভাবে তিনি পুলিশের চাকরি পেলেন?
আমরা প্রায়ই লক্ষ্য করি আমাদের দেশের কোনও কোনও পুলিশ সেবার নামে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার-নির্যাতানের খড়গ নামিয়ে আনেন এবং বিপরীতে সমাজ অধিপতি শোষক নির্যাতকদের সেবায় নিয়োজিত থাকেন। ফলে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি অন্যায় আচরণ বেড়েই চলেছে এবং বাড়তে বাড়তে তা ৪৬ লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় পর্যবসিত হয়েছে। চরিত্রগত কতোটা অবনমন ও মানসিকতার বিকৃতি কতোটা বেড়ে গেলে একজন মানুষ মানুষের মরদেহ সৎকার করার পথ পরিহার করে পুড়িয়ে ফেলতে পারে, সংঘটিত ঘটনার প্রেক্ষিতে এমন প্রশ্ন করা যেতেই পারে। চরিত্রের অবনমন ও মানসিকতার বিকৃতি এখানে এতোটাই অধিক যে, সেটা পরিমাপযোগ্য নয়। পুলিশ বিভাগে এমন অসৎ ও বিকৃত মানসিকতার মানুষের নিযুক্তি অবশ্যই পুলিশি নিয়মনীতির বিরোধী। প্রশ্ন করা যেতেই পারে, কীভাবে এমন লোক পুলিশ হতে পারে? অভিজ্ঞমহলের অভিমত এই যে, পুলিশের নিয়োগপদ্ধতিতে পুলিশের চাকরি প্রার্থীর শারীরিক সুস্থতার চেয়ে মানসিক সুস্থতা যাচাইয়ের উপর বেশি জোর দিতে হবে। যাতে মানসিকভাবে অসুস্থ কোনও লোক পুলিশে চাকরি না পান।