স্টাফ রিপোর্টার ::
বন্ধুকে নিয়ে আইফোন চুরি করতে গিয়েই খালা ও খালাতো ভাইকে খুন করেছে সপ্তম শ্রেণি পড়–য়া মাদ্রাসা ছাত্র। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে এ কথা স্বীকার করে সে বলেছে, ফোন বিক্রির টাকা দিয়ে পার্টি করতে চেয়েছিল তারা। ওই ছাত্রের বাড়ি বিশ্বম্ভরপুর থানাধীন গনারগাও গ্রামে। বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকার সাভার থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সকালে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাছননগর এলাকার একটি বাসা থেকে মা ও ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন ফরিদা বেগম (৫০) ও তাঁর ছেলে মিনহাজ আহমদ (১৯)। মিনহাজ সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলেকে নিয়ে চার বছর ধরে সেখানেই থাকতেন ফরিদা। বাড়িটি তাঁর এক প্রবাসী ভাইয়ের। বাড়িটির অন্য অংশে ফরিদার দূরসম্পর্কের আরেক বোনও বসবাস করেন। আটক কিশোর ওই আত্মীয়ের ছেলে।
এদিকে, বৃহঃপতিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আ. ফ. ম. আনোয়ার হোসেন খান জানান, পার্টি করার জন্য টাকা জোগাড় করতে দূরসম্পর্কের খালার বাসা থেকে আইফোন, টাকা-পয়সা ও সোনাদানা চুরির পরিকল্পনা করে সপ্তম শ্রেণি পড়–য়া ওই ছাত্র। একই বাসায় পাশাপাশি ভাড়া থাকতো ওই শিক্ষার্থীর পরিবার।
পুলিশ সুপার আরও জানান, পরিকল্পনামাফিক সোমবার নিজ বাসায় সহযোগী বন্ধুকে নিয়ে রাত্রিযাপন করে ওই শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার ভোরে পাশের ইউনিটে থাকা খালার বাসায় চুরি করতে যায় তারা। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে খালাতো ভাই মিনহাজের ঘুম ভেঙে যায় এবং তাদের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে রান্নাঘর থেকে বটি দা নিয়ে এসে খালাতো ভাই মিনহাজকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় মিনহাজের মা ফরিদা’র ঘুম ভেঙে গেলে তাকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পুলিশ সুপার আ. ফ. ম. আনোয়ার হোসেন খান জানান, ওই শিক্ষার্থীর দাবি তার বন্ধু তার খালা ও খালাতো ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। হত্যার পর সিলেট থেকে বিমানযোগে তারা রাজধানী ঢাকায় পালিয়ে গিয়ে সাভারে আত্মগোপন করে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে ঢাকার সাভার থেকে বৃহ¯পতিবার ভোরে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অপর অভিযুক্ত তার বন্ধুকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
এই ঘটনার আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এটি নিয়ে গভীরভাবে তদন্ত করছি। মাদ্রাসা ছাত্রের মা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তাকে এখনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। তবে পুলিশ কাজ করছে। এই হত্যাকা-ের সাথে আরও কেউ জড়িত থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের শনাক্ত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক, গোয়েন্দা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহম্মদ উল্লাহ ভূঁইয়া।