স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে ঘর থেকে মা ও ছেলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পৌর শহরের হাছননগর এলাকা থেকে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে। নিহত দুজন হলেন ফরিদা বেগম (৫০) ও তাঁর ছেলে মিনহাজুল ইসলাম (২০)। মিনহাজ সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র ছিল। নিহত মা-ছেলে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের বশিয়াখাউরি গ্রামের বাসিন্দা। শহরে তারা মেয়ের জামাইর বাসায় বসবাস করতেন।
প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানান, চার বছর আগে ফরিদা বেগমের স্বামী জাহেদুল ইসলাম মারা যান। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মেয়েকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছেলের কাছে বিয়ে দেবার পর তিনি ওখানেই থাকছেন। বাসায় থাকতেন ফরিদা বেগম ও তার কলেজ পড়–য়া ছেলে মিনহাজুল ইসলাম। কিছুদিন ধরে ফরিদা বেগমের খালাতো বোন নার্গিস বেগম ও তার মাদ্রাসা পড়–য়া ছেলে ফাহমিদও এই বাসাতেই থাকতো। তিনদিন আগে ঢাকা থেকে এই বাসায় আসে নার্গিস বেগমের ছেলে ফয়সল আহমদ (৩০)। সে মাদকাসক্ত ছিল বলে জানিয়েছেন নিহতদের স্বজন ও প্রতিবেশীরা। ঘটনার পর ফয়সল ও ফাহমিদ এই দু’জনকেই পাওয়া যাচ্ছে না। ফয়সলকে ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। নার্গিস বেগমকে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানাযায়, সোমবার রাতের কোন এক সময় এই ঘটনা ঘটে। সকালে গৃহকর্মী কাজে এসে মা-ছেলের গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ ও তাদের পাশে রক্তাক্ত বঁটি দা পড়ে থাকতে দেখেন। পরে প্রতিবেশীরা বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে মা ছেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পিবিআইয়ের একটি টিম বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। বটিদা দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যাকা-টি সংঘটিত হয়েছে। লোমহর্ষক এই হত্যাকা-টি পরিকল্পিতভাবে ঘটনানো হয়েছে বলে দাবি নিহতের স্বজনদের।
নিহত ফরিদা বেগমের ফুফাতো ভাই সজিব বলেন, খবর শুনে এসে যা দেখেছি তা বিশ্বাস করতে পারছিনা। এমন মর্মান্তিক হত্যা মেনে নেয়া যায় না। ঘটনার পর থেকে বাসার অন্য বাসিন্দার দুই ছেলে পলাতক। তাছাড়া আহত মহিলাও ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারে। আমারা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করবে পুলিশ।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। দ্রুতসময়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
পুলিশ সুপার আ.ফ.ম আনোয়ার হোসেন বলেন, হত্যাকা-টিকে অধিক গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সিআইডি ও পিবিআই বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। হত্যার সাথে যেই জড়িত থাকুক তাকে খুঁজে বের করে আনা হবে।