আশিস রহমান ::
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও ভোগান্তি দূর হয়নি ৪ গ্রামের মানুষের। কেবল একটি মাত্র সেতুর অভাবে যুগ যুগ ধরে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন দোয়ারাবাজার উপজেলার সদর ইউনিয়নের রায়নগর, বাগরা, সুন্দরপই ও বড়বন্দ গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মরানদীর উপর রায়পুর থেকে শরীফপুর সংযোগ সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী বার বার দাবি জানিয়ে আসলেও আজোবধি আলোর মুখ দেখেনি। বিগত দিনে কোনো সরকারের আমলে এখানে সেতু নির্মাণে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রত্যেক বার ভোটের সময় ঘনিয়ে আসলে জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে যান। কিন্তু নির্বাচনের পরে আর কেউ সামান্যতম খোঁজখবর পর্যন্ত রাখেন না। এভাবেই বার বার উপেক্ষিত হয়েছে জনগুরুত্বপূর্ণ রায়পুর থেকে শরীফপুর সংযোগ সেতুর দাবি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতু না থাকায় বাঁশের নড়বড়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও পথচারীরা।
রায়নগর গ্রামের বাসিন্দা কাঁচা মিয়া (৫৩) বলেন, আমরা বাপ-দাদার আমল থেকে এখন পর্যন্ত একই অবস্থায় আছি। সেতু না থাকায় উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারিনা। সন্তানদেরকে উচ্চশিক্ষার জন্য এলাকার বাইরে ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করাতে পারিনা। অসুস্থ রোগীদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে ডাক্তার দেখাতে পারিনা। আমাদের এই দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই।
একই গ্রামের বাসিন্দা মাছচাষী মো. রাজা মিয়া (৩৪) ও বাবলু (৩০) বলেন, এখানে সেতু না থাকায় মাছের খাবার আনতে এবং মাছ বাজারজাত করতে যা কষ্ট করতে হয় তা বলে বুঝানো যাবেনা।
ব্যবসায়ী শিপন মিয়া (৪০) বলেন, এই একটি মাত্র সেতুর অভাবে আমরা শত বছর পিছিয়ে আছি। এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং কৃষিকাজ করে অতিরিক্ত পরিবহন ব্যয় বহন করতে গিয়ে আমাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে।
স্থানীয় যুবক মাজহারুল ইসলাম বলেন, চার গ্রামের প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষার্থী উপজেলা সদরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনায় আছে। রায়নগর-শরীফপুর সংযোগ সেতু না থাকায় বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার হতে হয়। এতে পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, রায়নগর-শরীফপুর সংযোগ সেতু নির্মাণের বিষয়ে কোনো কোনো প্রস্তাবনা দেওয়া আছে কীনা আমার জানা নেই। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইনএনও) নেহের নিগার তনু বলেন, রায়নগর থেকে শরীফপুর সংযোগ সেতু নির্মাণের বিষয়ে এলাকাবাসী আমাকে লিখিতভাবে জানালে আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।