সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘বিপ্লবী সরকার’ ঘোষণা, সংবিধানের চতুর্থ ও পঞ্চদশ সংশোধনী এবং মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের দুইটি ধারার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে পৃথক চারটি রিট দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার (২৭ অক্টোবর) রিটকারীর আইনজীবী এ এস এম শাহরিয়ার কবির এ তথ্য জানান। রিট আবেদনগুলো বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় থাকবে। গত সপ্তাহে এ রিটগুলো করেন নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন।
বিপ্লবী সরকার ঘোষণা নিয়ে রিটে বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। ইতোমধ্যে সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ অনুসারে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন না হলে সংবিধানের ১২৩ (৩) (খ) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন হবে। আর এই লঙ্ঘনের জন্য বর্তমান সংবিধানের ৭ (ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধসহ প্রচলিত আইনে অন্যান্য অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রয়েছে। এসব যুক্তি তুলে ধরে বর্তমান সরকারকে বিপ্লবী সরকার হিসেবে ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।
আবেদনে গত ৮ আগস্ট গঠিত সরকারকে বিপ্লবী সরকার হিসেবে ঘোষণায় গেজেট প্রকাশে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
এছাড়া জুলাই বিপ্লবে জীবন উৎসর্গকারী ও যারা আহত হয়েছেন, তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণায় গেজেট প্রকাশে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না, সেই মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব ও জাতীয় সংসদের সচিবকে রিটে বিবাদী করা হয়।
চতুর্থ সংশোধনী নিয়ে বলা হয়, এই সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় শাসনপদ্ধতির পরিবর্তে রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনপদ্ধতি চালু এবং বহুদলীয় রাজনীতির পরিবর্তে একদলীয় রাজনীতি প্রবর্তন করা হয়।
আবেদনে চতুর্থ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল জারি করতে আর্জি জানানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব ও জাতীয় সংসদের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে রিটে।
আর পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে করা রিটে ওই সংশোধনীকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা প্রশ্নে রুল জারি আবেদন করা হয়েছে। এই রিটে বিগত তিনটি নির্বাচন (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত) আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা প্রশ্নেও রুল চেয়েছেন রিটকারী। এছাড়া ২০১৮ সালের মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইনের দুটি ধারার (মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা-সম্পর্কিত) বৈধতা নিয়েও তিনি রিট করেন।