স্টাফ রিপোর্টার ::
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সংঘটিত নৃশংস পল্টন হত্যাকা- ও জুলাই ২০২৪ অভ্যুত্থানে গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় শহরের জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সুনামগঞ্জ পৌরসভা ও সদর উপজেলা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় পরিষদের শুরা ও কর্মপরিষদের সদস্য এবং সিলেট মহানগর আমীর ফখরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তোফায়েল আহমদ খাঁন।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অ্যাড. শামস উদ্দীন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাড. রেজাউল করিম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মমতাজুল হাছান আবেদ, সদর উপজেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল হাকিম খাঁন, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বদরুল কাদির শিহাব, সাবেক পৌর আমীর অ্যাড. হেলাল উদ্দিন, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান পিয়াস, ব্যবসায়ী মো. ফরিদ উদ্দিন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জ পৌর জামায়াতের আমীর অ্যাড. নুরুল আলম। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সুনামগঞ্জ পৌর জামায়াতের সেক্রেটারী আব্দুছ ছাত্তার মামুন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ জাকারিয়া হাসান রাহী। সমাবেশ চলাকালে ইসলামী সংগীত পেশ করেন সাদিক আহমদ ও নাফিউজ্জামান সানী।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কোনো জঙ্গি সংগঠনের নাম নয়। এই সংগঠন কোনো ভুঁইফোড় সংগঠন নয়। একটি দায়িত্বশীল সংগঠন। এই সংগঠনের মাধ্যমে আল্লাহর নাম প্রতিষ্ঠা হয়। এই সংগঠন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করবে।
বক্তারা বলেন, ৫ আগস্ট আন্দোলনে পুলিশ স্টেশন, সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ঘর-বাড়ি পাহারা দিয়েছে এই সংগঠনের সদস্যরা। আমাদের সংগঠনের কাজ কোনো নেতাকে খুশি করার জন্য নয়। আল্লাহকে খুশি করার জন্য। তারা বলেন, সরকার পতনের আন্দোলনে সকল শহীদদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সিলেট মহানগর আমীর ফখরুল ইসলাম বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনের হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছিল সদ্য পতন হওয়া সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন ঢাকার তিন স্থানে জামায়াত ইসলামীর সমাবেশ হয়েছিল। তখন শেখ হাসিনা উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে মানুষকে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলেছিল। তিনি বলেন, প্রায় ১৮ বছর যাবত মানুষ তার নিজস্ব মতপ্রকাশ করতে পারেনি। সম্পদ ও টাকা লুটপাটে ছিল আওয়ামী লীগ সরকার। তিনি আরও বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের যারা লুটপাট করেছে, দুর্নীতি করেছে, তাদের এই পাপের প্রায়শ্চিত্ত হবেই হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তোফায়েল আহমদ খাঁন বলেন, যারা এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে চায়, তারাই নিঃশেষ হয়ে যায়। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গোটা জাতির ইতিহাস। এই ইতিহাস হাইজ্যাক হয়েছে একটি মাত্র পরিবারের জন্য। পাঠ্যবই পরিবর্তন করে মনগড়া ইতিহাস সম্বলিত পাঠ্যবই প্রকাশ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী সরকার পতন আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন, তারা সমগ্র জাতির স¤পদ। এঁদের হত্যার সঠিক বিচার করা হবে এদেশের মাটিতে। তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের সাংগঠনিক কার্যকলাপে প্রমাণ করবো, আমরা জনগণের বন্ধু।