শহীদনূর আহমেদ ::
প্রশাসন-পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনীর কঠোর অ্যাকশনে যাওয়ার পর গেল চারদিন ধরে বন্ধ রয়েছে ইজারাবিহীন ধোপাজান-চলতি নদী বালুমহালে লুটপাট। এবার নদীতে অবৈধভাবে বালু পরিবহনকারী নৌযান ঠেকাতে আরও কৌশলী হয়েছে পুলিশ। ধোপাজান-চলতি নদীর উৎসমুখে বাল্কহেড বসিয়ে ব্লক করে দেয়া হয়েছে ভারি নৌযান চলাচলের পথ। তবে গ্রামীণ পণ্য পরিবহন ও যাতায়াতের জন্য নির্দিষ্ট পথ খোলে রেখেছেন সংশ্লিষ্টরা।
শুক্রবার বিকাল ৫টায় আনুষ্ঠানিকভাবে নদীতে আড়াআড়িভঅবে ৩টি বাল্কহেড বসিয়ে প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেন পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন। এসময় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাজমুল হকসহ পুলিশ ও গণমাধ্যমের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগে একাধিক সংঘবদ্ধ বালু-পাথর লুণ্ঠনকারী চক্রের বেপরোয়া লুটপাটে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুরের ইজারাবিহীন ধোপাজান-চলতি নদী। বালু লুট বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে নদীর উৎসমুখে বাঁশের বেড়া নির্মাণ, পুলিশের টহল জোরদার এবং যৌথবাহিনীর অভিযানের পরও বন্ধ হচ্ছিল না ধোপাজান নদীতে বালু লুট। সংঘবদ্ধ লুটকারীদের বাগে আনতে ব্যর্থ হতে থাকে পুলিশ ও প্রশাসনের নেয়া সকল কৌশল। পরে এ নিয়ে প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী নদীর উৎসমুখে অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয় দেড় শতাধিক বালু ভর্তি বাল্কহেড ও অন্যান্য নৌযান। গত ৪ দিন ধরে স¤পূর্ণরূপে বালু লুট বন্ধ থাকলেও বালুখেকোদের সকল অপতৎপরতা বন্ধে সর্বশেষ বাল্কহেড দিয়ে নদীর উৎসমুখ বন্ধ করে পুলিশ প্রশাসন।
জেলা পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে সীমিত জনবল থাকার পরও ধোপাজান-চলতি নদীতে ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করে আসছে। বেশ কিছুদিন দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশকে ব্যস্ত থাকতে হয়। এই সুযোগে বালুখেকোরা নদীতে বালু লুটের মতো অনৈতিক কাজ করতে থাকে। তারা সংঘবদ্ধ থাকায় অনেক সময় তাদের রোধ করা সম্ভব হয়নি। বিগত কিছুদিন ধরে পুলিশ কঠোর অবস্থানে। অভিযান চালিয়ে অনেক নৌযান জব্দ করা হয়েছে। মামলা হয়েছে, বালু লুটের সাথে জড়িত কিছু লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বালু লুণ্ঠনকারীদের কঠোর হস্তে দমন করতে নদীতে বাল্কহেড বসিয়ে উৎসমুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পুলিশ এখন থেকে আরও তৎপর থাকবে। লুটপাটে জড়িতদের ছাড় দেয়া হবে না।