সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আটক ৮৪ ভারতীয় জেলেকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার তিনি এই আহ্বান জানান। অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করার দায়ে এসব জেলেকে বিভিন্ন সময়ে আটক করা হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী বাংলাদেশের ভালো স¤পর্ক আছে। এ সময় তিনি সামগ্রিক দিক বিবেচনায় বাংলাদেশে আটক পশ্চিমবঙ্গের জেলেদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।
গত ১৮ অক্টোবর বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারের অভিযোগে ৪৮ ভারতীয় জেলেকে আটক করা হয়। এ সময় তিনটি ফিশিং ট্রলার জব্দ করা হয়। মোংলা বন্দরের অদূরে ফেয়ারওয়ে বয়াসংলগ্ন গভীর সাগর থেকে তাঁদের আটক করে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী। পরে জব্দ করা ট্রলার ও আটক জেলেদের মোংলা থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তার আগে, গত ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশের জলসীমায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ৩১ জেলেসহ ভারতীয় দুটি মাছ ধরার ট্রলার আটক করে নৌবাহিনী। নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিএনএস শহীদ আকতার উদ্দিন নিয়মিত অভিযান পরিচালনাকালে কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগর থেকে ট্রলার দুটি আটক করে। আটককৃতদের বাড়ি ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার বিভিন্ন গ্রামে।
এ বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ১৬ অক্টোবর আটক ট্রলার দুটিতে ৩৬ জন ছিলেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করায় দুটি মাছ ধরার ট্রলার ধরা পড়েছে। ৩৬ জন জেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তারা বর্তমানে কারাগারে আছেন। এ ঘটনার পরে আরও তিনটি ট্রলার - যাতে ৪৮ জন জেলে ছিলেন, কোনোভাবে আবারও সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তাঁদেরও গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, হয়তো ট্রলারগুলো দিক হারিয়ে ফেলেছিল কিংবা অন্য কোনো কারণে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করেছিল। তিনি বলেন, আমাদের জানতে হবে, তাঁরা ভুল করে সেখানে গিয়েছিলেন, নাকি অন্য কোনো কারণে। আমরা আইনের আওতায় থেকে যা যা করা সম্ভব, তা করছি।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে মৎস্যজীবীদের ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে প্রতিবেশী দেশের জলসীমায় না যেতে। তাঁদের সতর্ক করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, তিন দিন আগে একটি বাংলাদেশি ট্রলার এখানে (ভারতের জলসীমায়) ডুবে গিয়েছিল। তাঁদের কোস্ট গার্ড উদ্ধার করেছে। চারজনকে উদ্ধার করা হয়েছে, কিন্তু একজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি...তাঁদের আমরা মুক্তি দিয়েছি। কারণ তাঁদের বৈধ নথি ছিল। ভারতীয় জেলেদেরও আধার কার্ড আছে।
বাংলাদেশ সরকারকে ভারতীয় জেলেদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়ে মমতা বলেন, বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু। আমরা একই ভাষায় কথা বলি, একই খাবার খাই এবং একই পোশাক পরি। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভালো স¤পর্ক থাকা প্রয়োজন, কারণ এটি বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত সমাধানে সহায়ক।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনীতিতে মুখ বদলায়, কিন্তু আমি আশা করি, পরিস্থিতি আবার ভালো হবে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত থাকা দুটি দেশের মধ্যে পার¯পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখা সব সময় কাম্য।