শাল্লা প্রতিনিধি ::
শাল্লায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম কর্তৃক সাংবাদিকদের প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে উপজেলার ছাত্র-জনতা। ২২ অক্টোবর (মঙ্গলবার) দুপুর ১২টায় উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে উপজেলা শহীদ মিনারে এই মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস ঘেরাও করে জনতা।
এসময় দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি জয়ন্ত সেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি আমির হোসেন, দৈনিক শাল্লার খবর ডটকমের সম্পাদক বাদল চন্দ্র দাশ, দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি দিলোয়ার হোসেন, দৈনিক আজকালের খবর পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি কাজী বদরুজ্জামান, দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি সন্দীপন তালুকদার, দৈনিক সবুজ সিলেট পত্রিকার প্রতিনিধি পাবেল আহমেদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলার সমন্বয়ক রাকিবুল হাসান, বিএনপি নেতা মাসুদ আল কাউচার, শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালামের দুর্নীতির সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে উপজেলার ৮টি বিদ্যালয়ের পুরানো ভবন বিক্রি, ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ, হাওরভাতা দেওয়ার নামে শিক্ষকদের নিকট থেকে টাকা উত্তোলনসহ নানা অনিয়ম ও বিতর্কিত কর্মকা-ে জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে। সাংবাদিকরা আরও বলেন, আব্দুস সালাম তার দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন। যা সন্ত্রাসী কর্মকা-ের সামিল ও অত্যন্ত নিন্দনীয়। তাকে শাস্তি প্রদান করে দ্রুত অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় আরও বৃহৎ কর্মসূচি পালন করবে সাংবাদিকরা।
উল্লেখ্য, গত ১১জুলাই শাল্লায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালামের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিকরা। পাশাপাশি গত ২০ অক্টোবর (রোববার) বিদ্যালয়ের পুরানো নিলামের তথ্য চেয়ে আবেন করেন সাংবাদিক আমির হোসেন। এরপূর্বে তার দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করে সাংবাদিক জয়ন্ত সেন ও শামস শামীম। এরপরই সাংবাদিক জয়ন্ত সেন ও আমির হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে ভাড়াটিয়া লোক খোঁজতে থাকেন আব্দুস সালাম। উপজেলার কিছু ছাত্রদের বলে তোমরা সাংবাদিক জয়ন্ত সেনের হাত-পা ভেঙে থানায় ফেলে দিয়ে আসো। সাংবাদিক আমির হোসেনকে পিটিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করো। চার আনার সাংবাদিকদের শিক্ষা দাও। টাকা ১ লাখ, ৫ লাখ, যা লাগে দিব। ছাত্ররা তার এমন কথোপকথন হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও করে সাংবাদিকদের জানাও। তারই প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন সাংবাদিকসহ উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজ। পরে ১ঘণ্টা শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস ঘেরাও রাখেন সাধারণ মানুষ। এসময় অন্যান্য সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন। ইতোপূর্বে সাংবাদিকদের ‘সাইজ’ করার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন আব্দুস সালাম।
এ বিষয়ে সিলেট বিভাগীয় উপপরিচালক জালালউদ্দিন বলেন, এমন কর্মকা- একজন শিক্ষা অফিসার করতে পারেন না। আপনারা লিখিত অভিযোগ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব। তিনি বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার ঠিকই বলেছেন, কোন সুস্থ মানুষ এমন কাজ করতে পারেন না।