মানবতা রক্ষাকল্পে রাষ্ট্রের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন, কেউ কেউ বলছেন, শহরের বাসাবাড়িগুলোতে ইদানিং সাহায্যপ্রার্থী ও ভিক্ষুকের আনাগোনা বেড়েছে। সকাল থেকেই তাঁরা আসতে শুরু করেন। আগের দিনগুলোতে সাহায্যপ্রার্থীরা তেমন অধিক সংখ্যায় ছিলেন না। এইসব সাহায্যপ্রার্থী নারী-পুরুষেরা বিভিন্ন বাহানা তৈরি করেন। অভাব-অনটনসহ নিজের বা স্বজন অন্যকারও চিকিৎসা, কন্যাদায়গ্রস্ততা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণ তাঁরা ইনিয়ে-বিনিয়ে ব্যক্ত করেন। কেউ কেউ তো সত্যিকার অর্থেই পঙ্গুত্বকে নিজের অঙ্গে বহন করে হাজির হন। এইসব ভাসমান মানুষজনের কোনও পরিসংখ্যান আমাদের রাষ্ট্রের তথ্যভা-ারে আছে কিনা কে জানে।
পরিসংখ্যান থাক বা না থাক, এইসব মানুষের সংখ্যাবৃদ্ধি দেশের ভেতরে খাদ্যনিরাপত্তা ও চিকিৎসাসেবার দৈন্যসঞ্জাত নাজুক অবস্থাকে প্রতিপন্ন করে। এই নাজুক অবস্থা আরও বেশি করে দৃশ্যমান হয় যখন প্রকাশ্যে তেমাথার রাস্তার এক পাশে কোনও এক রোগাক্রান্ত বৃদ্ধ পড়ে পড়ে কাতরান তখন এবং বুঝাই যায় রাষ্ট্র তার খবর রাখে না। বোধ করি প্রতিচ্যের কোনও উন্নত দেশে এমন দৃশ্য কখনওই পরিলক্ষিত হবার নয়।
অভিজ্ঞমহলের ধারণা, আমাদের দেশে মানবতা রক্ষাকল্পে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই সমস্যা নিরসনে অগ্রসর হয়ে উপায় অনুসন্ধান করা ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সামাজিক সম্পদ বৈধ-অবৈধ উপায়ে আত্মসাৎকারি দুর্বৃত্তরা যেভাবে বিপুল পরিমাণে সম্পদ কুক্ষিগত করে চলেছে তাতে করে এমন ভাসমান সাহায্যপ্রার্থী ও ভিক্ষুকের সংখ্যা দিনে দিনে আরও বৃদ্ধি পাবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
শোনা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সরকার পতনের প্রাক্কালে নিরুদ্দেশপুরে পলায়নকারীরা গাড়িভর্তি করে টাকা নিয়ে গেছেন। এমন হলে তো সমাজের অধিকাংশ নি¤œ আয়ের মানুষের হাতে টাকার স্বল্পতা ও শূন্যতা দেখা দেবেই এবং মানুষ ভাসমান সাহায্যপ্রার্থী ও ভিক্ষুকে পরিণত হবেই। এর একটা রাজনীতিক সমাধান আমাদেরকে অবশ্যই সন্ধান করে বের করে বাস্তবে কার্যকর করতে হবে।