সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
চলতি বছর এইচএসসির ছয়টি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশ করা হলেও গড় পাসের হার এবার কম। ২০২৩ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
তবে এবারের পরীক্ষায় সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থী এবং বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা বেশি লাভবান হয়েছেন। যদিও এই ফলাফলকে শিক্ষার গুণগত অগ্রগতি মনে করেন না সংশ্লিষ্টরা।
আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, সাবজেক্ট ম্যাপিং করে দেওয়ায় ফলাফল অনেক ভালো হয়েছে। যারা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাস করেছিল, তাদের মধ্যে অনেকেই ২০২৪ সালে এইচএসসিতে মানবিক বিষয়ের পরীক্ষার্থী। বিষয়গুলো স্থগিত হওয়ার কারণে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে বেশি নম্বর পেয়েছে তারা।
উদাহরণ দিয়ে অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, যে পরীক্ষার্থী এসএসসিতে উচ্চতর গণিতে পরীক্ষা দিয়েছিল, সে এবারের এইচএসসিতে মানবিক বিষয় নেওয়ার কারণে তার উচ্চতর গণিত ছিল না। কিন্তু মানবিকের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের নম্বর পেয়েছে গণিতের সমান। যে কারণে অনেকের ফলাফল ভালো। তবে আমাদের হাতে কোনও অপশন ছিল না। আমরা চাই না এই পরিস্থিতি আর সৃষ্টি হোক।
এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। গত বছর ২০২৩ সালে পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। সেই হিসাবে এবার পাসের হার কমেছে শূন্য দশমিক ৮৬ শতাংশ। এছাড়া স্থগিত পরীক্ষাগুলো সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল করা হয়েছে। ফলে ফল আরও ভালো হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেই হিসাবে আগের বছরের তুলনায় ফল ভালো হওয়ার কথা থাকলেও বেশি খারাপ বলা যায় না।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোর মধ্যে ইংরেজি ও আইসিটির মতো আবশ্যিক বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের ফেলের হার বেশি। যেসব শিক্ষা বোর্ডে এ দুটি বিষয়ে বেশি ফেল করেছে, সেই বোর্ডে পাসের হার কমেছে। আর যেসব বোর্ডে ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষায় নম্বর কম পেয়েছে, সেই বোর্ডের ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এছাড়া এবার ব্যবহারিক পরীক্ষাও নেওয়া হয়নি। এ কারণেও হয়তো কেউ কেউ ফেল করতে পারতো।
এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণ করে ১৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ জন। মোট উত্তীর্ণ হয়েছেন ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৩০৯ জন। অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা দুই লাখ ৯৫ হাজার ৭৪৯ জন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র অংশ নেয় ৬ লাখ ৬৬ হাজার ১৩ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ ৫ লাখ ৩ হাজার ৫৯৫ জন। জিপিএ-৫ ৬৪ হাজার ৯৭৮ জন। ছাত্রদের পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। এবার ছাত্রীরা অংশ নেয় ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৪৫ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ ৫ লাখ ৩১ হাজার ৭১৪ জন। জিপিএ-৫ ৮০ হাজার ৯৩৩ জন, ছাত্রীদের পাসের হার ৭৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ।