বাজারে ডিমের হালি বেড়ে ৮০ টাকা হয়ে গেছে, কাঁচা মরিচের দাম ৬০০ টাকা। অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও আকাশছোঁয়া। গত ক’দিন আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল যে, ডিমের দাম বাড়িয়ে ২০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ‘ডিম সিন্ডিকেট’ পকেটেস্থ করেছিল ১৮০ কোটি টাকা। এবারও তাই ঘটেছে। সিন্ডিকেট (বাণিজ্যসংঘ) সদস্যদের সম্পদ বেড়েছে, কমেছে দেশের ডিমখেকো সাধারণ মানুষের।
মুনাফামুখি অর্থনীতির এইরূপ চৌর্যবৃত্তির স্বরূপ দেখে কারও কারও মনে হতে পারে যে, জনগণের পকেট মারার এর চেয়ে কার্যকর পদ্ধতি বোধ করি আর দ্বিতীয়টি নেই। দেশের আর্থনীতিক ইতিহাস বলছে, সিন্ডিকেটবিরোধী প্রচার প্রচারণার সঙ্গে অতীতের সব ক্ষমতাসীন সরকারের পক্ষ থেকেই বার বার সিন্ডিকেট নির্র্মূলের ঘোষণা বীরদর্পে প্রচার করা হয়েছে, কিন্তু প্রকারান্তরে নির্মূল না হয়ে সিন্ডিকেট প্রতিনিয়ত আরও বেশি করে সক্রিয় ও শক্তিশালী হয়েছে কেবল। অর্থাৎ ‘ডাল মে কুচ কালা’র মতো ‘রাষ্ট্র সিন্ডিকেটকে নিয়ন্ত্রণ করে না, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে রাষ্ট্রকে’ রাজনীতিবিজ্ঞানে এইরূপ একটি কথা প্রচলিত আছে। আসল কথা- বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও সিন্ডিকেটের দাপট ক্রমে বাড়ছে বই কমছে না। বরং অতীতের সকল উদাহরণকে টপকে এবারের ডিম সিন্ডেকেট শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা অর্জন করেছে। বর্তমান লাভের লোভে পাগলপারা অর্থনীতির লাগামটানা সম্ভব না হলে এইরূপ সিন্ডেকেটের দৌরাত্ম্য থেকে জনগণকে কীছুতেই সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়।
শোনতে খারাপ লাগতে পারে। তারপরেও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বাধ্য হয়ে বলতেই হয় যে, বাজারের মালিকানা কিংবা বাজারে সার্বিক আধিপত্য ধনকুবেরদের হাতে রেখে পণ্যসামগ্রীর মূল্য অন্য কেউ নিয়ন্ত্রণ করবে, সে গুড়ে বালি।