ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ স¤পাদক ও ওই ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নিয়োজিত ডিলার মিনহাজ উদ্দিন মাহতাব মেননের বিরুদ্ধে কার্ডধারী সুবিধাভোগীদের মধ্যে চাল বিতরণে ওজনে কম দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী কার্ডধারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে দু’জন ডিলার রয়েছেন। এই ইউনিয়নে দরিদ্র ও হতদরিদ্র পরিবারের ৫০৪জন কার্ডধারী সুবিধাভোগী রয়েছেন। খাদ্য অধিদপ্তর থেকে চলতি অক্টোবর মাসের জন্য ডিলার মিনহাজ উদ্দিন মাহতাব মেননের অনুকূলে ২৬২জন কার্ডধারীর জন্য সাত টন ৮৬০ কেজি ও ডিলার মো. প্রবালের অনুকূলে ২৪২জন কার্ডধারীর জন্য সাত টন ২৬০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে ডিলার মিনহাজ উদ্দিন মাহতাব মেনন কার্ডধারীদের বিপরীতে বরাদ্দ পাওয়া চাল ধর্মপাশা খাদ্যগুদাম থেকে উত্তোলন করেন। প্রতি কেজি চাল ১৫ টাকা দামে প্রত্যেক কার্ডধারীকে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা। গতকাল বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের রাজাপুর বাজারে থাকা ডিলারের গুদাম থেকে কার্ডধারীদের মধ্যে চাল বিতরণ শুরু করা হয়। প্রত্যেক কার্ডধারীদের মধ্যে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও তাদের মধ্যে ২৫ কেজি থেকে সাড়ে ২৭ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।
কার্ডধারী সুবিধাভোগীদের অভিযোগ, দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ডিলার নিজে উপস্থিত থেকে আমাদেরকে ৩০ কেজির পরিবর্তে ২৫ থেকে সাড়ে ২৭ কেজি করে চাল দিয়েছেন। তদন্ত করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে।
উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের রাজাপুর দক্ষিণ হাটি গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. সুমন মিয়া (৩৮) বলেন, ডিলার মিনহাজ উদ্দিন মাহতাব মেনন বুধবার সকাল ১১টার দিকে তার গুদাম থেকে চাল বিতরণ শুরু করেন। প্রথমে তিনি ১৯ কেজি থেকে ২২ কেজি করে ২০/২৫জন কার্ডধারীকে চাল দিয়েছিলেন। পরে বিষয়টি চারদিকে জানাজানি হওয়ায় পর ডিলার কার্ডধারীদের মধ্যে ২৫ কেজি থেকে সাড়ে ২৭ কেজি করে চাল দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত ভিডিও আমার কাছে রয়েছে।
ডিলার মিনহাজ উদ্দিন মাহতাব মেনন বলেন, আমি দলীয় ক্ষমতার কোনো প্রভাব খাটাইনি। বস্তার ওজন ও চাল পরিবহন করে আনলে কাটা-ছেঁড়া বস্তা থেকে কিছু চাল পড়ে ওজনে ঘাটতি দেখা দেয় । আর এ জন্য আমি প্রতি কার্ডধারীকে ৩০কেজি করে চাল না দিয়ে সাড়ে ২৮ কেজি করে চাল দিয়েছি। নিরুপায় হয়ে আমাকে প্রতি কার্ডধারীকে দেড় কেজি করে চাল কম দিতে হয়েছে।
ধর্মপাশা খাদ্যগুদামের সহকারী উপ খাদ্য পরিদর্শক কামরুল ইসলাম বলেন, ওই ডিলারকে সঠিক ওজনে চাল ও ভালো বস্তা দেওয়া হয়েছে। তিনি বরাদ্দ পাওয়া চাল বুঝে নিয়ে নিজের দোষ ঢাকতে গিয়ে আমাদেরকে অযথা দোষারোপ করছেন।
ইউএনও মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারীদের মধ্যে চাল ওজনে কম দেওয়া যাবে না। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি। চাল ওজনে কম দেওয়ার খবরটি আমি শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।