সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তার পরিবারের সদস্যদের নামে ৩৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৪১৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নানা দুর্নীতি, অর্থপাচার ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ স¤পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান খান কামালসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সংস্থাটি।
বুধবার (৯ অক্টোবর) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়। এদিন বিকালে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এই তথ্য জানান।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বাদে অন্য আসামিরা হলেন তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, ছেলে শাফি মোদাচ্ছির খান জ্যোতি, মেয়ে শাফিয়া তাসনিম খান এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিএ) মনির হোসেন। পিএ মনির হোসেনের ব্যাংক হিসাবে ৩১ কোটি ৩১ লাখ ৭০ হাজার ৮৩৪ টাকার অবৈধ লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুদক।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএস ও অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মো. হারুন অর রশিদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ডিআইজি মোল্লা নজরুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেনের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগে এখনও অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান শেষ হলেই তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত-১ বিভাগের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মানি লন্ডারিং, নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্যসহ বিভিন্ন উপায়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সাবেক এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তার ৮টি ব্যাংক হিসাবে ৫৫ কোটি ৯২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৬ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য রয়েছে দুদকের হাতে। অবৈধ উপায়ে অর্জিত এসব স¤পদ গোপন বা আড়াল করার জন্য রূপান্তর, হস্তান্তর করার অভিযোগে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
লুৎফুল তাহমিনা খান ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে অপর ১০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৪৩ কোটি ৭৭ লাখ ৭৪৫ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুদক। এ অভিযোগে তাদের দুই জনকে আসামি করে দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা দায়ের করেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল ও ছেলে শাফি মোদ্দাছির খান জ্যোতির বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। ওই মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ৮৪ কোটি ৭৭ লাখ ৫৭ হাজার ৫৭২ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর, স্থানান্তরের মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মেয়ে শাফিয়া তাসনিম খানসহ আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে চতুর্থ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিন্নাতুল ইসলাম। এ মামলার এজাহারে বলা হয়, বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২৬ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার ৫৪২ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করা হয়।
আসাদুজ্জামান খান কামালের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) মনির হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নাছরুল্লাহ হোসাইন। মনির হোসেনের ১২টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩১ কোটি ৩১ লাখ ৭০ হাজার ৮৩৪ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুদক।