৫ অক্টোবর পালিত হয়ে গেল বিশ্ব শিক্ষক দিবস। ১৯৯৪ সাল থেকে প্রতি বছরে ৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী শিক্ষক দিবস পালিত হয়ে আসছে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে সংস্থা ইউনেস্কোসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ‘শিক্ষকের কণ্ঠস্বর, শিক্ষা একটি সামাজিক অঙ্গীকার’ প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে এই দিবসটি পালিত হয়।
শিক্ষকদের পেশাগত মর্যাদা, ন্যায্য অধিকার এবং একটি সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বিশ্ব শিক্ষক দিবস শুধুমাত্র শিক্ষকদের অবদানকে স্বীকৃতি দেয় না, বরং তাদের পেশাগত বিকাশের জন্য প্রয়োজনী সমর্থন ও সম্মানের প্রতি আলোকপাত করে। শিক্ষকরা হচ্ছেন আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মেরুদ-। তারা শুধু পাঠ্যপুস্তক জ্ঞানই দেন না। একজন শিক্ষার্থীর জীবনচলার পথে পথপ্রদর্শকও বটে। শিক্ষার্থীদের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকেন বলে শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা ও মতামত শিক্ষার মানোন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে। শিক্ষা যেকোনো সমাজের মূল ভিত্তি আর শিক্ষকরা হলেন সেই সমাজের প্রাণশক্তি, জ্ঞানশক্তি। কিন্তু আমরা দেখি শিক্ষা উন্নয়নে শিক্ষকদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় না। এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। এজন্যেই হয়তো আশানুরূপ শিক্ষা উন্নয়নে বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিক্ষাব্যবস্থায় টেকসই পরিবর্তন আনতে হবে। তার জন্যে প্রয়োজন শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা ও তাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে কেন্দ্র করে একটি সামাজিক চুক্তি গড়ে তোলা। শিক্ষা নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্রে তাদের মূল্যবান অভিজ্ঞতাকে যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে।
আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তন, সামাজিক অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং বৈশ্বিক মহামারির প্রভাব শিক্ষাব্যবস্থায় উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি বিরাট প্রতিবন্ধকতা।
শিক্ষকদের কণ্ঠস্বরকে মূল্যায়ন দিতে হবে। শিক্ষক কণ্ঠস্বর মূল্যায়ন করার মানেই হচ্ছে ঠিক শিক্ষার টেকসই উন্নয়নের পথে একটি বড় পদক্ষেপ। তাছাড়া শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ, কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ এবং নীতি নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই, যেমন যথাযথ শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষা উপকরণ, প্রযুক্তির অভাব। তাছাড়া শিক্ষকদের আর্থিক পেশাগত এবং সামাজিক অবস্থা উন্নয়ন নিশ্চিত করা জরুরি।
আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষকদের সমর্থন ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। শিক্ষকদের কণ্ঠস্বরকে মূল্যায়ন করা এবং তাদের ভূমিকা যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব। শিক্ষকদের অবদানের কথা আমরা স্মরণ করি এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।