সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
দেশের পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় আনুমানিক ১৪ হাজার ৪২১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বা প্রায় ১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। রোববার রাজধানীর ধানমন্ডির সিপিডি কার্যালয়ে ‘পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া : সিপিডির বিশ্লেষণ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন সংগঠনের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মুনতাসীর কামাল।
মুনতাসীর কামাল জানান, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে সিপিডি এই গবেষণা করেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ১ দশমিক ৮১ শতাংশ। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের খসড়া জিডিপির শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য অনুমিত জিডিপির শূন্য দশমিক ২৬ শতাংশ।
বন্যায় কৃষি ও বন খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে মুনতাসীর কামাল বলেন, এই দুই খাতে ক্ষতির পরিমাণ ৫ হাজার ১৬৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এটি মোট ক্ষতির ৩৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
সিপিডির গবেষণায় আরও দেখা গেছে, অবকাঠামো খাতে ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ৬৫৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা বা ৩২ দশমিক ২৭ শতাংশ ও আবাসন খাতে ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার ৪০৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
গবেষণা বলছে, সবচেয়ে বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে নোয়াখালীতে। মোট ক্ষয়ক্ষতির ২৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ ক্ষতি নোয়াখালীতে হয়েছে। অন্যদিকে কুমিল্লায় ২৩ দশমিক ৫১ শতাংশ, ফেনীতে ১৮ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে ১১ দশমিক ৬৩ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, অনেক ক্ষয়ক্ষতি টাকার অঙ্কে নিরূপণ করা গেলেও, মানুষের জীবনের মতো কিছু বিষয় টাকার অঙ্কে নিরূপণ করা যায় না। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার জন্য সহায়তার অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তার পরিসর বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে বন্যা-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ সমন্বয়ের ওপর জোরারোপ করেন তিনি।
সিপিডির রিসার্চ ডিরেক্টর খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এবারের বন্যায় সরকারি খাতের চাইতে বেসরকারি খাত অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় ৫৩ শতাংশ। ব্যক্তি খাতের এ ক্ষয়ক্ষতি ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। সুতরাং, সামনের দিনের দুর্যোগ সহযোগিতার যে কাঠামো, তাতে পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে সরকারের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি থাকা দরকার। তাদের কাজ হবে দুর্যোগের ফলাফল থেকে যেন মানুষেরা বেরিয়ে আসতে পারে, তেমন একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা।