স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন বলেছেন, মামলার কার্য দ্রুততম সময়ে সঠিক তদন্ত, যথাযথ কাগজপত্র এবং সাক্ষ্য প্রমাণে রায় হলে দেশ ও জাতি উপকৃত হয়। মামলাজনিত কারণে আদালতে আসা-যাওয়ার হয়রানি থেকে বাঁচা যায়। যথাসময়ে সাক্ষী না পাওয়ায় মামলায় প্রভাব পড়ে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত মিলনায়তনে সুনামগঞ্জ বিচার বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত অর্ধ-বার্ষিক বিচার বিভাগীয় সম্মেলনের সাধারণ অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন বলেন, থানার কোনো কোনো মামলায় দেখা যায় কোনো ঘটনার মামলার তদন্তে যিনি আইও হন, তিনিই আবার মামলার বাদীও হন। তিনি বলেন, আজকাল ফেইসবুকের মামলা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফেইসবুক আইডি ফেইক না জেনুইন তা বের করার কৌশল খুঁজে বের করতে হবে। তবেই দেশের অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।
সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মামলা পরিচালনায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ডিএনএ রিপোর্ট দ্রুত না পাওয়ায় বিচার কাজ সম্পন্ন করতে বিলম্ব হয়। সিআর মামলায় বয়স নির্ধারণে সতর্ক থাকতে হবে। বয়স নিয়েও কিন্তু মিথ্যা তথ্য প্রদান করা হয়।
সুনামগঞ্জের আদালতের কোর্ট ইন্সপেক্টরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অবশ্যই মালখানার বিষয়ে জানা থাকতে হবে। মালখানায় সারিবদ্ধভাবে জব্দ করা সকল জিনিসপত্র রাখতে হবে। আদালত চাইলেই যেন পায়। এ জন্য আদালত সময় দেবে না।
সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন বলেন, একটি রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগ রয়েছে। আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ। আইন বিভাগ হলো- আইন সভা বা জাতীয় সংসদ রাষ্ট্রের সাধারণ আইন তৈরি ও পরিবর্তন করে। শাসন বিভাগ হলো- রাষ্ট্রের শাসন সংক্রান্ত কার্যাবলি পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা কর্মচারীকে বোঝায়। বিচার বিভাগ সরকারের যে অঙ্গ বা বিভাগ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সংবিধান ও আইন অনুযায়ী বিচার কাজ পরিচালনা করে থাকে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন কবির, জেলা জজ (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল) মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (১ম আদালত) তেহসিন ইফতেখার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাব্বির আহমদ আকুঞ্জি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম খাঁন।
লিগ্যাল এইড অফিসার সুলেখা দে-এর সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের (তত্ত্বাবধায়ক) ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিআইডি) সাইফুল ইসলাম ভূইঁয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. নজরুল ইসলাম সেফু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শেরেনুর আলী, পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. খায়রুল কবির রুমেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ অ্যাড. পিপি নান্টু রায়, দুর্নীতি দমন কমিশন সিলেটের সহ-পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন, পিবিআই কর্মকর্তা মুরসালিন।
সম্মেলনের অধিবেশনে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জজশীপে মামলা দায়ের ও নিষ্পত্তি সংক্রান্ত পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের কাঁকন দে।
ম্যাজিস্ট্রেসিতে মামলা দায়ের ও নিষ্পত্তি সংক্রান্ত পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নির্জন কুমার মিত্র।
দেওয়ানি মামলা নিস্পত্তিতে চিহ্নিত প্রতিবন্ধকতা সংক্রান্তে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র সহকারী জজ শারমীন খানম নীলা।
ফৌজদারি মামলা নিষ্পত্তিতে চিহ্নিত প্রতিবন্ধকতা সংক্রান্তে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান।