যাদুকাটা ও ধোপাজান নদীতে প্রাণ-প্রকৃতি বিনাশী ড্রেজার ও বোমামেশিন বন্ধে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ, ইজারা পদ্ধতি বাতিল করে পাথর-বালু মহালে সরকারিভাবে ক্রয়কেন্দ্র চালু, পাথর-বালু মহালে ইঞ্জিনচালিত স্টিলবডি নৌকা প্রবেশ বন্ধ করে ধোপাজান ও যাদুকাটা নদীতে হাওরাঞ্চলের হাজার হাজার বারকি শ্রমিকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির দাবিতে সভা করেছে সুনামগঞ্জ জেলা বারকি শ্রমিক সংঘ।
বারকি শ্রমিক সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি নাসির মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের পরিচালনায় সোমবার বিকাল ৪টায় যাদুকাটা নদী সংলগ্ন মিয়ারচর বাজারে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি রতœাংকুর দাস জহর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি সুখেন্দু তালুকদার মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম ছদরুল।
বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মো. ফরিদ মিয়া, যাদুকাটা শাখা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের, সদস্য ওমর আলী, হানিফ মিয়া, শামছু মিয়া, সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, যুগ যুগ ধরে হাওরাঞ্চরের বারকি শ্রমিকগণ বালতি বেলচা দিয়ে হাতের সাহায্যে পাথর বালি উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। মহাল ছিল পাথর-বালিতে পরিপূর্ণ। বিগত ১৩/১৪ বৎসর যাবৎ প্রশাসনের অসাধু চক্রের সহায়তায় উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইজারাদার ও ব্যবসায়ীরা স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফা লাভের আশায় ড্রেজার-বোমাসহ পরিবেশ বিধ্বংসী বিভিন্ন নামের খননযন্ত্র ব্যবহার করে মহালগুলো ধ্বংস করে চলেছে। এতে হাজার হাজার বারকি শ্রমিক কর্মহীন হয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
বক্তারা আরও বলেন, ২০০০ সন হতে সকল ইঞ্জিনচালিত স্টিলবডি নৌকা মহাল এলাকার বাইরে থাকার দাবি জানালেও, প্রশাসন দরিদ্র বারকি শ্রমিকদের দাবি আমলে না নেয়ায় ধোপাজান ও যাদুকাটা নদী হতে বারকি শ্রমিকরা আজ কর্মহীন বেকারত্বের অভিশপ্ত জীবনযাপন করছে। বিপরীতে ধোপাজান ও যাদুকাটা অসাধু সিন্ডিকেটের লুটপাটের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
সভায় বক্তারা যাদুকাটা ও ধোপাজান নদী হতে এই সকল লুটপাটকারীদের অবিলম্বে উচ্ছেদ করে হাজার হাজার বারকি শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে ইঞ্জিনচালিত সকল স্টিল বডি নৌকা মহাল এলাকার বাইরে রাখার কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ, ইজারা পদ্ধতি বাতিল করে সরকারিভাবে পাথর বালু ক্রয়কেন্দ্র চালু করা, পাথর-বালুখেকো সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে মহাল এলাকায় পূর্বের ন্যায় সনাতন পদ্ধতিতে পাথর-বালু আহরণে হাজার হাজার বারকি শ্রমিকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। - সংবাদ বিজ্ঞপ্তি