স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেছেন, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ক্যাম্পাস সুন্দর করা হবে। এইযে কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি হয়েছিল। যার জন্য সুনাম ফলক নির্মাণ হবে। যারা রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন তাদের নাম এখানে থাকবে। ঠিকই একইভাবে সতীশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়েরও ৭৫ বছর পূর্তির হওয়ায় চন্দ্রফলক তৈরির কাজ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ক্যাম্পাসে যে টিনের লাল চালাগুলোর রং ধূসর হয়ে গেছে, ভেঙে গেছে। মনে হচ্ছে আমার মতো বুড়ো মানুষ। তাই ক্যাম্পাস কখনো বুড়ো হতে পারে না ক্যাম্পাস থাকবে তরুণদের। কলেজের জন্য আমি অঙ্গিকার করছি না তবে আমার যতটুকু সাধ্যমতো কাজ করে যাব। সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ক্যাম্পাস সুন্দর করা হবে।
সোমবার সকালে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মোহাম্মদ সাদিক এমপি আরও বলেন, কলেজে শিক্ষক সংকটের বিষয়টি আমি দেখবো। তবে যে কয়জন আছেন তাদের কাছ থেকে যা শিক্ষা নেয়া যায়, আমাদের নিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, নিজের ক্যাম্পাস নিজে সুন্দর না রাখলে কে রাখবে? এই ক্যাম্পাস দেখে অনেক কষ্ট হয়েছে। সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ক্যাম্পাস ছিলো খুব সুন্দর। তাই কলেজের ক্যাম্পাসের গাছগুলোর আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ১৯৭০ সালে আমি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র ছিলাম। হাঁটি হাঁটি পা পা করে হাফ প্যান্ট পরা মোহাম্মদ সাদিক ফুল প্যান্ট পরে কলেজে এসে ভর্তি হয়েছিলাম এবং সেই ’৭০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্টেডিয়ামে নির্বাচনী প্রচারণায় এসেছিলেন। তখন আমি ছোট ছিলাম এবং সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে আমি এই মহান মানুষের সাথে হাত মিলানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটিই আমার জীবনে তাকে প্রথম দেখা এবং এটিই আমার শেষ দেখা।
এমপি মোহাম্মদ সাদিক বলেন, আমি শিক্ষকতা করতে চাইতাম। যার কারণে প্রথম জীবনে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে তিন বছর লেকচারার ছিলাম। প্রাইভেটে থাকায় বিসিএস পরীক্ষা দিলাম। বিসিএসের পর আমাকে জোর করে সিভিলে পাঠিয়ে দেওয়া হল এবং আমি শিক্ষা সচিব হিসেবেই রিটায়ার্ড নিলাম। একজন প্রাইভেট টিচার থেকে উপ-সচিব হয়ে শিক্ষা সচিব হয়ে জীবন শেষ করলাম।
তিনি বলেন, এই কলেজের বেদনা আমার জানা আছে। ছাত্রছাত্রী শিক্ষকদের বেদনা আমি জানি। তোমরা শিক্ষার্থীরা কী চাও সেটিও আমি জানি। তবে বেসিক ঠিক রেখে বোনাসে যেতে হবে। বেসিক অর্থাৎ তোমার লেখাপড়া ঠিক রেখে চালিয়ে যেতে হবে। তোমরা যখন লেখাপড়া করবে না, তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে তোমরা পিছিয়ে পড়বে। তোমাদের পিছিয়ে পড়া আওয়ামী লীগের পিছিয়ে পড়া। তাই তুমি যখন পড়ালেখা করে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে এবং তোমাদের যেনো এখানে অবদান থাকে সেটি মাথায় রাখতে হবে। তবেই জীবন স্বার্থক হবে।
ড. মোহাম্মদ সাদিক এমপি আরও বলেন, আজকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলা গড়ার, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারই জ্যেষ্ঠ সন্তান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ১৮ বার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কারো রক্তচক্ষুকে ভয় না করে শেখের বেটি বাংলাদেশকে তার লক্ষ্যে পৌঁছানোর কাজ করছেন। এই যুদ্ধে আমাদের তার পাশে থাকতে হবে। আমাদের প্রত্যেককে বিলাসিতার সুখে গা ভাসালে চলবে না, আত্মতৃপ্তিতে ভোগা যাবে না। একাত্তরের বিজয়ের পরে আমরা ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আমরা ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বলেই ৭৫-এ সর্বনাশ হয়েছে। তাই ঘুমিয়ে যাওয়া যাবে না, সদা সজাগ থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ যারা ভাবছেন শেষ হয়ে গেছে, তারা ভুল করছেন মুক্তিযুদ্ধ চলছে, চলবে।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শামসুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক অ্যাড. বিমান কান্তি রায়, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী আবুল কালাম, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা কমিটির আহ্বায়ক ইফতেখার আলম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ জামশেদ আলী প্রমুখ।