স্টাফ রিপোর্টার ::
উজান ভাটির ভারী বর্ষণে সুনামগঞ্জে সোমবার থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত নদ নদীর পানি বেড়ে দ্বিতীয়বার বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও মঙ্গলবার সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করে। দিনব্যাপী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সুরমার নদীর পানি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৯ সেন্টিমিটার কমেছে। উজান ভাটিতে বৃষ্টিপাত বন্ধ থাকলে পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সোমবার রাতে মওসুমের একদিনের রেকর্ড বৃষ্টিপাতে আশঙ্কাজনভাবে পানি বাড়ায় জেলার তিনটি উপজেলার প্রায় ১ হাজার ২৩৫জন বন্যার্ত আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, সোমবার সারারাত সুনামগঞ্জে ভারী বর্ষণ হয়েছে। এই বছরের একদিনের রেকর্ড বৃষ্টিপাত ৩০০ মিলিমিটার রেকর্ড হয়েছে সুনামগঞ্জের ষোলঘর স্টেশনে। একই দিনে তাহিরপুরের লাউড়েরগড় পয়েন্টে ২১১ মিলিমিটার এবং ছাতকে ২২৯ মিলিমিটার ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। তিনটি পয়েন্টের ভারী বৃষ্টিপাত সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, সদর, বিশ্বম্ভরপুর ও ছাতকে পানি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ করে তোলে।
তিনি আরো জানান, সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি মঙ্গলবার সকালে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত সন্ধ্যা ৬টায় ১৯ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত বন্ধ থাকায় এবং উজানে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পরিস্থিতি উন্নতির দিকে বলে তিনি জানান। তিনি আবহাওয়া সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে জানান, আগামী ৩-৪দিন ভারী ও মাঝারি বর্ষণের সম্ভাবনা আছে। তবে বড়ো বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনা নাই।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ৭টি উপজেলায় দ্বিতীয় বারের মতো বন্যাপরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ৭ লাখ ৯২ হাজার লোকজন বন্যা কবলিত হয়েছেন। এর মধ্যে ৫৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে সুনামগঞ্জ সদর, দিরাই, তাহিরপুর ও জগন্নাথপুরে প্রায় ১ হাজার ৩২৫ জন বন্যার্ত আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র ও ত্রাণ প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পরিস্থিতি উন্নতির পথে রয়েছে বলেও জানান তিনি।