শহীদনূর আহমেদ ::
সাম্প্রতিক বন্যায় সুনামগঞ্জের সড়কপথের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল এলজিইডি মিলে জেলায় প্রায় ২৫০ কিলোমিটার গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়কের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ভেসে উঠছে সড়কের ক্ষতচিহ্ন। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে চরম দুর্ভোগ নিয়ে যাতায়াত করছেন এলাকাবাসী। এদিকে বন্যার পানি নামার পর সড়কপথে যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সাময়িকভাবে সংস্কার করে দেয়ার কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
সুনামগঞ্জহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বন্যার প্রবল ¯্রােত, হাওরের ঢেউয়ে সড়ক বিভাগের আওতাধীন ৯৫.৫৬ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কের বাঁধ ওয়াসআউট, বিটুমিনাস সার্ফেস উঠে যাওয়া, সেতুর অ্যাপ্রোচ ধস, খানাখন্দ তৈরি হওয়ায় একাধিক জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারাবাজারের ২২ কিলোমিটার সড়ক। তিনটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক, সুনামগঞ্জ-বিশ^ম্ভরপুর সড়ক, জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ সড়ক, মদনপুর-দিরাই-শাল্লা সড়ক, দোয়ারাবাজার-সুনামগঞ্জ সড়ক, তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়ক এবং পাগলা-জগন্নাথপুর-রাণীগঞ্জ সড়ক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এই ক্ষতিগ্রস্ত সড়কপথ সংস্কারে ২৬৯.৭ কোটি টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম প্রাং।
অপরদিকে, সাম্প্রতি বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় সড়ক প্রকৌশলী অধিদপ্তর এলজিইডির আভ্যন্তরীণ ও গ্রামীণ সড়কপথ। এই দপ্তরের আওতাধীন প্রায় ১৬০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ১২ উপজেলার প্রায় গ্রামীণ সড়ক বয়ে বেড়াচ্ছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বন্যার কারণে কিছু কিছু সড়কের সেতু অ্যাপ্রোচে ধস দেখা দিয়েছে। একাধিক সড়ক মাঝপথে ওয়াশআউট হয়েগেছে, কিছু রাস্তার সোল্ডার ভেঙেছে, ঢেউয়ের আঘাতে সড়কের প্রোটেকশন সাইট ব্লক ক্ষতিসহ মাটির রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার দোয়ারাবাজার, ছাতক, শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর, সদর ও বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার গ্রামীণ সড়কের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে জানিয়েছে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারে প্রায় ৪০০ কোটির টাকার প্রকল্পের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার মিয়া। জনগণের চলাচলের স্বার্থে জরুরি বরাদ্দের মাধ্যমে আপাতত মেরামত করার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের চিঠি পাঠানোর কথা জানান এই প্রকৌশলী।