স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জের বেশির ভাগ এলাকা থেকেই নেমে গেছে পানি, তবে শুক্রবার থেকে ভারতের মেঘালয়ে আবার ভারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টি হচ্ছে সুনামগঞ্জেও। এমন পরিস্থিতিতে জুলাইয়ের প্রথম দিকে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নদীর পানি বেড়ে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বন্যার মধ্যমেয়াদি পূর্বাভাস স¤পর্কিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব বলেন, আরও অন্তত দুই দিন সিলেটে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময়ে মেঘালয়েও ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে সেখানকার আবহাওয়া অফিস। মেঘালয়ে ভারি বৃষ্টি হলে সেখানকার পাহাড় গড়িয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ দিয়ে ঢল নামে। এতে সীমান্তবর্তী এ দুই জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, মৌসুমি বায়ু দেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। ফলে দেশের অভ্যন্তরে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা অববাহিকার উজানের কিছু স্থানে বিভিন্ন সময়ে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে মাঝারি থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর ২৮ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত আগামী ১০ দিনের নদী-অববাহিকা ও অঞ্চলভিত্তিক বন্যা পরিস্থিতির সম্ভাব্য অবস্থা নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও সংলগ্ন উজানে সোমবার সকাল পর্যন্ত ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময় এ অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে। এ সময় সুরমা, কুশিয়ারা, পুরাতন সুরমা ও সারিগোয়াইন নদ-নদীর পানি দ্রুত বেড়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নি¤œাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এ কারণে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী ঘরবাড়িগুলোতে পানি ছিল। বন্যার কারণে ভোগান্তিতে রয়েছেন কুশিয়ারা অববাহিকার বাসিন্দারা, তবে সুরমাসহ জেলার অন্যান্য পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এর আগে, গত ১৬ জুন থেকে সৃষ্ট বন্যায় বিপাকে পড়েছিল সুনামগঞ্জের মানুষ। উজানের পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল প্রায় ১০ লাখ মানুষ। বন্যার পানি এখন কমে গেলেও নতুন করে আবারও বন্যার পূর্বাভাসে জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, আগামী দু’দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এতে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও ততটা ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা নেই।