1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ০৭:২০ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টি নেতার বক্তব্যে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে তোলপাড়

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪

মাহমুদুর রহমান তারেক, যুক্তরাজ্য ::
যুক্তরাজ্যের বিরোধী দলীয় ও লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টরামারের এক বক্তব্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে। স্টারমারের বক্তব্যের জেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তুমুল সমালোচনা ও ক্ষোভ।
গত ২৫ জুন যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক ডেইলি সানের ‘ইলেকশন শো-ডাউন’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কিয়ার স্টারমার। এসময় এক প্রশ্নকারী লেবারপার্টিকে নেতৃত্ব দেয়া কিয়ার স্টারমারকে প্রশ্ন করেন অবৈধ অভিবাসী ইস্যু নিয়ে তাঁর অবস্থানের কথা। সেই প্রশ্নের উত্তরের এক পর্যায়ে বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে টেনে স্টারমার জানান, যারা বাংলাদেশের মত দেশ থেকে আসে তাদের অপসারণ করা যেতে পারে, এবং একইভাবে আমরা কয়েকটি স্থানের লোকদের এখানে আসা বন্ধ করতে পারি। রুয়ান্ডা প্রজেক্ট ব্যয় বহুল উল্লেখ করে বলেন, যে দেশ থেকে এসেছে তাদের সেখানে ফেরত পাঠানো হবে, আমি নিশ্চিত করবো আমাদের প্লেন রওনা হয়েছে। তাঁর এই বক্তব্য মুহূর্তের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কেউ বলছেন, কিয়ার স্টারমার নেতিবাচকভাবে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর কথা বলেছেন, আবার কেউ বলছেন, অন্য অনেক দেশ থাকতে তিনি কেন বাংলাদেশের কথা বললেন?
এদিকে বাংলাদেশি কমিউনিটির ক্ষোভের মুখে পরিস্থিতি সামাল দিতে লেবার পার্টির পক্ষ থেকে একটি বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। বার্তায় বলা হয়েছে, কিয়ার স্টারমারের বক্তব্য এডিট করে নেচিবাচকভাবে ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে, তিনি ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটিকে প্রচ- ভালোবাসেন, সাপোর্ট করেন। যুক্তরাজ্যে আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের অবদান আছে। বাংলাদেশকে তিনি নিরাপদ দেশ হিসেবে মনে করেন, নিরাপদ দেশ থেকে যারা এই দেশে অবৈধ হয়েছেন, তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলতে গিয়ে বাংলাদেশের নাম বলেছেন। বাংলাদেশ নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের কোন উদ্দ্যেশ্য ছিল না।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনের দিন কয়েক আগে কিয়ার স্টারমারের এমন বক্তব্য প্রবাসীদের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, কিয়ার স্টারমারের নেতিবাচক বক্তব্য আসন্ন নির্বাচনে লেবার পার্টি মনোনিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থীদের ভোট ব্যাংকে প্রভাব পড়তে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে অনেক বাংলাদেশি ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে লেবার পার্টিকে ভোট না দেয়ারও আহ্বান জানাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার নির্বাচনে কোন দলীয় প্রার্থীকে ভোট না দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বেছে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
কিয়ার স্টারমারের বক্তব্য ভোটের মাঠে প্রভাব পড়তে পারে ধারণ করে লেবার পার্টির এমপি রোশনার আলী ও আপসানা বেগম নিজেদের অবস্থান জানিয়েছেন।
পপলার অ্যান্ড লাইম হাউস আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আপসানা বেগম বুধবার এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। তিনি সেখানে বলেছেন, আমি স্পষ্টভাবে বলছি, আমি যতদিন আছি মাইগ্রেন্ট কমিউনিটির বিরুদ্ধে দোষারোপ সহ্য করবো না। আমাদের বাংলাদেশি কমিউনিটি বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন করেছেন, যখন ১৯৭৮ সালের আন্দোলনে আলতাফ আলী নিহত হয়েছিলেন, তখন স্লোগান ছিল ‘আমরা এখানে ছিলাম, আমরা এখানে থাকবো’। নিশ্চিত থাকেন আপনারা আমাকে ভোট দিলে শক্তিশালী একজন আওয়াজের জন্য ভোট দিচ্ছেন। যে সংসদে গিয়ে আমাদের মাইগ্রেন্ট কমিউনিটির অধিকার এবং সম্মান রক্ষা করবে যে কোন উপায়ে।
এদিকে আসন্ন নির্বাচনে ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত বাংলাদেশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কিয়ার স্টারমারকে একহাত নিয়েছেন।
বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড স্টেপেনিট আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আজমল মাসরুর এক বার্তায় বলেছেন, কিয়ার স্টারমার আবারও বাংলাদেশী অভিবাসীদের টার্গেট করেছেন, তাদের ফেরত পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কেন তিনি বাংলাদেশিদের এককভাবে বের করে দিচ্ছেন? রুশনারা আলী (লেবার পার্টির একই আসনের বর্তমান এমপি) কি লেবার পার্টির বাংলাদেশ বিরোধী অবস্থানকে সমর্থন করেন? আমি লেবার পার্টি কর্তৃক অভিবাসীদের অন্যায্য নির্বাসনের বিরোধিতা করব।
লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টির লুটন শাখার নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুল কারীম সুয়েদ বলেন, লেবার লিডারের এমন বক্তব্য আমাদের হতাশ করেছে। একজন নেতার এমন বক্তব্য তার নেতৃত্বের যোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যেখানে পরিসংখ্যান বলছে যুক্তরাজ্যে ইরান-আফগানিস্তানের আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা সর্বাধিক সেখানে শুধুমাত্র বাংলাদেশের নামোল্লেখ করে এমন বক্তৃতা কেন দিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া সামনের নির্বাচনে তিনি দেখবেন।
কেউ কেউ আবার কিয়ার স্টারমারের বক্তব্যকে ভিন্নভাবেও দেখছেন অনেকে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বাংলা গণমাধ্যম রানার মিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক আ স ম মাছুম বলেন, কিয়ার স্টারমার যেটা বলেছেন সেটা একেবারেই অযৌক্তিক না। কারণ ভারত, পাকিস্তান, ইরান, আফগানিস্থান থেকে বাংলাদেশের তুলনায় বেশী মানুষ ব্রিটেনে এসেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মতো আর কোন দেশ এতো বেশি অ্যাসাইলাম নেননি, অথবা অবৈধ হননি। পার্সেন্টিজ হিসাব করলে সবচেয়ে বেশী স্টুডেন্ট ডিপেন্ডেন্ট এনেছেন বাংলাদেশিরা, যাদের বড় একটি অংশ ভুয়া। বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি ওয়ার্ক পারমিট সিস্টেম এ্যাবিউজ করেছে। সিস্টেম এক্সপ্লয়েট করেছি আমরাই। শুধু কিয়ার স্টারমার উচ্চারণ করলেই দোষ। লেবারের ভোট বর্জনের ডাক না দিয়ে আমাদের ৮ জন লেবার প্রার্থী হয়েছেন। এদেরকে ম্যান্ডেট দিয়ে সংসদে পাঠান, তাদের থেকে ২/৩ জন মন্ত্রী হলে তখন সরকারের পলিসি লেভেলে লোক থাকবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com