সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাতে প্রভাব ফেলছে। চলতি বছর এই মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৮ শতাংশ স্পর্শ করলেও ২০২৫ সালে তা ৮ শতাংশে নেমে আসার পূর্বাভাস দিয়েছে মাস্টার কার্ড ইকোনমিক ইনস্টিটিউট (এমইআই)। পাশাপাশি ডলারের দাম বেশি সময় চড়া থাকলে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
গত বৃহ¯পতিবার মাস্টার কার্ড ইকোনমিক ইনস্টিটিউটের আয়োজনে ‘গ্লোবাল অ্যান্ড বাংলাদেশ আউটলুক অ্যান্ড রিস্ক’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব তথ্য জানায় সংস্থাটি। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাস্টারকার্ড ইকোনমিক্স ইনস্টিটিউটের এশিয়া প্যাসিফিক ও এমইএ-এর চিফ ইকোনমিস্ট ডেভিড ম্যান। দক্ষিণ এশিয়া ও বাংলাদেশের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ববাজারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশ স¤পর্কে আলোচনা করেন তিনি। প্রবৃদ্ধির ধারণা, মূল্যস্ফীতির প্রবণতা, সুদের হার, বৈদেশিক মুদ্রার গতিশীলতা, রপ্তানি সক্ষমতা, রেমিট্যান্স প্রবাহ, অতিরিক্ত সঞ্চয় ও ক্রেডিট মার্কেট সংক্রান্ত বিষয়েও বিস্তৃত আলোচনা হয়। এছাড়া প্রয়োজনীয় ও ঐচ্ছিক পণ্যের মধ্যে ভোক্তাদের ব্যয়ের ধরনে পরিবর্তন ও বাইরে খাওয়া এবং ই-কমার্স ও বিলাসবহুল ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দেওয়ার বিষয় আলোচনায় উঠে আসে।
বাংলাদেশের রিজার্ভের বিষয়ে ডেভিডমেন্ট বলেন, পুনরায় বাংলাদেশের রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে। কারণ প্রবাসী আয় বাড়ছে। কিন্তু প্রতি মাসে দুই বিলিয়ন ডলার প্রবাসী আয় শক্তিশালী রিজার্ভ গঠনের জন্য পর্যাপ্ত নয়। রিজার্ভ গঠন করতে রপ্তানি আয়ও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। দেশের মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পণ্যের সরবরাহ বাড়লে বাজারে দাম কমে আসতে পারে। পাশাপাশি ডলারের দামে স্থিতিশীলতা খুবই জরুরি। অর্থনৈতিক উন্নয়নে ই-কমার্স এবং ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণে শ্রীলঙ্কা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এরমধ্যে প্রথমটি ছিল রাজনৈতিক সদিচ্ছা, দ্বিতীয়টি শক্তিশালী মুদ্রানীতি এবং তৃতীয়টি হলো পর্যটন খাতে গুরুত্ব বাড়ানো। এগুলো বাংলাদেশেও প্রয়োজন।
তিনি বলেন, প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও দুঃখজনকভাবে আমরা দীর্ঘদিন একাধিক ডলারের দাম ধরে রেখেছিলাম। তাই ফরেক্স মার্কেটে এখনো অস্থিতিশীলতা বিরাজমান। আমার মনে হয় সরকার এখন আমাদের অর্থনীতির সমস্যা বুঝতে পেরেছে। তাই ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি দেওয়া শুরু করেছে। পাশাপাশি বাজেটও ছোট করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও ছোট করা দরকার।
বিদেশি মুদ্রাবাজার স¤পর্কে আতিউর রহমান বলেন, আমাদের রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি বাড়ছে ঠিকই কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগ কমছে। কারণ আমাদের দেশে সঠিক ব্যবসায়িক পরিবেশের অভাব। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হলে আমাদের দেশে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। ব্যবসায়ীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে।