বিদ্যালয়ের এক শ্রেণি থেকে অন্য শ্রেণিতে উঠা রবীন্দ্রনাথের সময়ে খুব কঠিন কাজ ছিল। একদা এই দেশের প্রবীণরা এর শিকার হয়ে যন্ত্রণাকাতর হয়েছেন। যে-কোনও একটা বিষয়ে অকৃতকার্য হলেই উপরের শ্রেণিতে উঠতে দেওয়া হতো না। প্রকারান্তরে এর অর্থ দাঁড়াতো এই যে, এক বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীকে তার অধিত পাঠক্রমের সবকটি বিষয়েই অকৃতকার্য বলে বিবেচনা করা হতো, অর্থাৎ শিক্ষার্থীর একটি বিষয়ের অকৃতকার্যতা তার অন্য সবকটি কৃতকার্য বিষয়ের ফলকেও অকৃতকার্য করে তোলতো। মাধ্যমিকে এমন নিয়ম ছিল, কেবল একটি বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী পরের বছর কেবল সেই অকৃতকার্য একটি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে কৃতকার্য হলে তাকে উত্তীর্ণ বলে বিবেচনা করা হতো এবং উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির সুযোগ সে পেতো। কিন্তু এতে করে শিক্ষার্থী তার শিক্ষাজীবনে একটি বছর পিছিয়ে যেতো, তার সহপাঠীরা তার থেকে মর্যাদায় এক কাঠি উপরের হয়ে পড়তো। এই নিয়মের কারণে অনুত্তীর্ণতার বেদনা রবীন্দ্রনাথের কবিতায়ও নাকি প্রকাশিত হয়েছে। তিনি কোথায় যেনও লিখেছেন, ‘সাত বার প্রবেশিলাম পরীক্ষার হলে’।
এবার থেকে এমনটা আর হবে না, গণমাধ্যমে এমন সংবাদ এসেছে। বলা হয়েছে, ‘নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এসএসসিতে এক বা দুই বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হলেও কলেজে ভর্তি হওয়া যাবে। তবে পরের দুই বছরের মধ্যে তাকে পাবলিক মূল্যায়নে অংশ নিয়ে বিষয়গুলোতে উত্তীর্ণ হতে হবে।’ বিদগ্ধমহলের ধারণা, এমন নিয়ম একেবারে মন্দ নয়। এতে করে ব্যতিক্রম বাদে অনেক শিক্ষার্থীই তাদের শিক্ষাজীবনে এক দুই বিষয়ে অনুত্তীর্ণতার কারণে উপরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ না হওয়ার বঞ্চনা থেকে রেহাই পাবে।