শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন তারা। আগামী ৫ জুন ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই উপজেলায়। এদিকে, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে সরগরম হয়ে উঠছে ভোটের মাঠ। প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা।
বুধবার (২৯ মে) সরেজমিন শান্তিগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পাড়া-মহল্লার অলিগলি ও চায়ের দোকানগুলোতে চলছে প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা। প্রার্থীদের নির্বাচনী পোস্টারে ছেয়ে গেছে গ্রাম-গঞ্জের হাটবাজার, অলিগলিসহ উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো। সমর্থকদের গণসংযোগসহ উঠান বৈঠক ও পথসভা চলছে প্রতিদিন। গানে গানে ভোট চাওয়া হচ্ছে মাইকের মাধ্যমে। সবমিলিয়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে নির্বাচনের প্রচারণা। প্রার্থীরা দিন রাত এক করে ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ভোটারদের মন জয়ে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- অর্থনীতিবিদ ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সিনিয়র সহ সভাপতি সাদাত মান্নান অভি (আনারস প্রতীক), সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ব্যবসায়ী হাজী আবুল কালাম (মোটরসাইকেল প্রতীক), শান্তিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বুরহান উদ্দিন দোলন (ঘোড়া) প্রতীক।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- মোশাররফ হোসেন জাকির (মাইক প্রতীক), রুকনুজ্জামান রুকন (চশমা প্রতীক), মাওলানা জাহাঙ্গীর খাঁন (টিউবওয়েল প্রতীক) ও আনোয়ার হোসেন (তালা প্রতীক)।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- দুলন রানী তালুকদার (পদ্মফুল প্রতীক), মোছা. নাজমা বেগম (প্রজাপতি প্রতীক), মোছা. রফিকা মহির (ফুটবল প্রতীক), জেসমিন আক্তার (হাঁস প্রতীক), খাইরুন নেছা (কলস প্রতীক)।
শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নে ১৫৫টি গ্রাম রয়েছে। মোট ভোটার ১,৪৫,৭৯৭ জন। তন্মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৪,২৮৫ জন, মহিলা ভোটার ৭১, ৫১০ জন ও হিজড়া ভোটার ২ জন।
মোটরসাইকেল প্রতীকে সুনামগঞ্জ সদর আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ী হাজী আবুল কালাম আবারও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি জন্মসূত্রে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের বাসিন্দা হলেও ব্যবসা-বাণিজ্য, বাসস্থান সবকিছুই সুনামগঞ্জ শহর কেন্দ্রিক। ভোটের মাঠে তার বর্তমান অবস্থা স¤পর্কে এ তিনি জানান, ভোটের পরিস্থিতি বেশ ভালো। সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। শিক্ষার প্রসারে কয়েকটি হাইস্কুল, কলেজ করেছি। জনগণের সেবায় আমি স¤পৃক্ত। এলাকার স্থানীয় সমস্যা-সমাধানে আমি কাজ করেছি। এলাকার উন্নয়নে আমি সব সময় থাকার চেষ্টা করি। আসন্ন নির্বাচনে জনগণ আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করলে আমি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও রাস্তাঘাটের উন্নয়নে কাজ করবো।
এদিকে, তারুণ্যের শক্তিকে পুঁজি করে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক দুইবারের মন্ত্রী আলহাজ্ব এম এ মান্নানের একমাত্র পুত্র অর্থনীতিবিদ সাদাত মান্নান অভি বলেন, আমার বাবাকে জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জের জনগণ ভোট দিয়ে সংসদে পাঠিয়েছেন। আমার বাবা দুই বার মন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে আমার বাবা সংসদে জনগণের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করছেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে বাবার যে স¤পৃক্ততা এবং সাধারণ মানুষ যেভাবে তাকে ভালোবাসেন ঠিক সেভাবেই তার সন্তান হিসেবে আমাকেও জনগণ ভালোবাসেন। এ ছাড়া আমি নতুন প্রজন্মের প্রার্থী। নতুন ভোটাররা বিশেষত যুবক যারা আছেন তারা আমাকে সমর্থন করছেন এবং নির্বাচনে আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন। সর্বোপরি, যেখানেই ভোট চাইতে গেছি সাধারণ মানুষের ভালোবাসা এবং সমর্থন পেয়েছি। আমি নির্বাচিত হলে শিক্ষার মানন্নোয়নে কাজ করবো, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ করবো। সে দিকে নজর রাখবো। পাশাপাশি জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও বেকারত্ব দূরীকরণে কাজ করে যাব।