স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের বিভ্রাট চরমে পৌঁছেছে। বিনা নোটিশেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন সাধারণ গ্রাহকরা।
একাধিক গ্রাহকের অভিযোগ, ঠিকমতো বিদ্যুৎ সরবরাহ না করেও অতিরিক্ত বিল হাতিয়ে নিচ্ছে পল্লীবিদ্যুৎ। কোনো কোনো সময় মনগড়া বিল তৈরি করে গ্রাহকদের বিপাকে ফেলে দিচ্ছে। তারা জানান, দীর্ঘ ২৪ বছর যাবত মিটার ভাড়া দিতে হচ্ছে। মনগড়া বকেয়া বিলও ধরিয়ে দেয়া হয় বিলে। তারা আরও জানান, বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করে গভীর নলকূপ থেকে পানি উত্তোলন করতে হয়। কিন্তু দিনে ও রাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় পানি সংকটে পড়েছেন মানুষজন।
এদিকে, গত ২৪ মে থেকে ২৬ মে পর্যন্ত প্রচন্ড গরমের মধ্যেও বিদ্যুৎ দিনে ২ বা ১ ঘণ্টা করে সরবরাহ করা হয়। গত ২৭ ও ২৮ মে দিনে ও রাতে বন্ধ ছিল বিদ্যুৎ সরবরাহ। এই কারণে পানি সংকটে পড়ে মানুষজন নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। মোবাইল চার্জ দেয়া সম্ভব না হওয়ায় জরুরি যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টায় বিদ্যুৎ দেয়া হয় আধা ঘণ্টা। পরে ৬টা ৫ মিনিটে নিয়ে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ। পরে ৬টা ১৫ মিনিটে আবারও আসে। চলে যায় ৬টা ২১ মিনিটে। আবারও ৬টা ২৩ মিনিটে বিদ্যুৎ দেয়া হয়, কিচ্ছুক্ষণ পর আবারও চলে যায়। এভাবেই চলছে পল্লীবিদ্যুৎ সরবরাহ।
সদরগড় গ্রামের গ্রাহক ইসমাইল হোসেন ও এরশাদ মিয়া বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় নারী, শিশু ও বয়স্কদের খুবই ভোগান্তি হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে মনগড়াভাবে। মিটার ভাড়াসহ বিল দেয়া হয় অতিরিক্ত।
আমিরপুর গ্রামের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, বেশি গরম, বৃষ্টি বা সামান্য বাতাস হলে আর বিদ্যুতের আশা করা যায় না। বন্ধ থাকে বিদ্যুৎ। মানুষের ভোগান্তি এখন চরমে।
ইয়াছিনপুর গ্রামের অপর শিক্ষার্থী পারভেজ আহমদ বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় লেখাপড়া করা যাচ্ছে না। এই আসে, এই চলে যায় এটাই পল্লীবিদ্যুৎ। বিদ্যুতের সমস্যায় মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
মইনপুর গ্রামের গ্রাহক আব্দুল্লাহ বলেন, পল্লীবিদ্যুৎ মানে একটা জ্বালা-যন্ত্রণা। সভা করলে বিদ্যুৎ নেই। মেহমান আসলে বিদ্যুৎ নেই। কোনো কারণ ছাড়াই বিদ্যুৎ থাকে না টানা এক-দুই দিন। এতে মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন।
হালুয়ারঘাট বাজারের ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, পল্লীবিদ্যুৎ থাকবে না। এতে মাইকিং করে জানালেও মানুষ এতোটা ভোগান্তির শিকার হতো না। আজ মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ নেই এলাকায়।
সুনামগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মিলন কুমার কুন্ডু বলেন, ৩/৪ দিন ধরে বিদ্যুৎ লাইনে সমস্যা। লাইনে মেরামত কাজ হচ্ছে। গত দুইদিন ঘূর্ণিঝড় রেমালের তা-বে লাইনের অনেক ক্ষতি হয়েছে। লাইনে মেরামত কাজ চলছে। মেরামত কাজ শেষ হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।