স্টাফ রিপোর্টার ::
তাহিরপুর উপজেলার বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়নের হাঁপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সকালে আসে শিশু শিক্ষার্থীরা। এসে দেখে দরজায় তালা ঝুলছে। তালাবদ্ধ দেখে শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা করার পর স্কুলের বারান্দায় খেলায় মেতে উঠে। বেলা ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে শিক্ষকদের কাউকে না পেয়ে একপর্যায়ে বাড়ি ফিরে যায় তারা। এদিকে কোনো কারণ ও নোটিশ ছাড়াই সোমবার (২৭ মে) স্কুল বন্ধ রাখায় ঘটনায় অভিভাবকমহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ জানিয়েছেন, গত সাত-আট মাস ধরে এভাবেই চলছে বিদ্যালয়টির শ্রেণি কার্যক্রম। শিক্ষকরা নির্ধারিত সময়ে না এসে আসেন বেলা ১১টায়। আর স্কুল ছুটি দিয়ে বেলা ২টায় চলে যান নিজেদের মতো করে। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষককে কয়েকবার বলা হলেও সমস্যা সমাধানে তিনি কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেননি।
অভিভাবক বাহার উদ্দিন বলেন, স্যার বলেছিলেন আজ উপবৃত্তির জন্য নাম লেখানোর শেষ দিন। আমি কাগজপত্র নিয়ে সাড়ে ১১টায় স্কুলে এসে কোনো শিক্ষককে পেলাম না। স্কুলও দেখি তালাবদ্ধ।
দাতা সদস্য আহাদ মিয়া জানান, স্কুলটিতে দেড়শোর বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থীরা সময়মতো বিদ্যালয়ে আসলেও শিক্ষকরা আসেন না। শিক্ষকরা সময়মতো যেন স্কুলে আসে এ নিয়ে গ্রামের মানুষ শিক্ষকদের সঙ্গে কয়েক দফায় আলোচনা করেন। কিন্তু শিক্ষকরা আমাদের কথার কোনো মূল্য দেন না। যে যার মত করে স্কুলে আসেন, আবার ইচ্ছে মত স্কুল ছুটি দিয়ে চলে যান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাধব চন্দ্র সরকার বলেন, পাঁচ দিনের জন্য উপজেলা সদরে শিক্ষকদের একীভূত ট্রেনিংয়ে আছি আমি। গতকাল আমার ট্রেনিংয়ের বিষয়টি বিদ্যালয়ের বাকি তিন সহকারী শিক্ষককে জানিয়েছি। পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করবে সহকারী শিক্ষক বিপ্লব মিয়া। তারা তিনজনেরই আজকে বিদ্যালয়ে থাকার কথা। তারা আমি না থাকলেই বিদ্যালয়ে আসতে চায় না। আমি বিদ্যালয়ে না থাকলে এমন অভিযোগ প্রায় সময়ই পাই। বেলা ১২টায় জানতে পেরেছি স্কুল তালাবদ্ধ, কোনো শিক্ষক যায়নি।
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল আওয়াল বলেন, হাঁপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী তিন শিক্ষক বিদ্যালয়ে সঠিক সময়ে উপস্থিত না হওয়ায় তাদের শোকজ করা হবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন, বিদ্যালয় তালাবদ্ধ রাখার কোন সুযোগ নেই। যেহেতু তারা এটি করেছেন শাস্তির মুখোমুখি হবেন।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।